নিজস্ব প্রতিবেদক:- সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। গেল ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে ভারীবর্ষণ না হলেও উজানের আসাম মেঘালয়ে ভারী বৃষ্টি হয়েছে। সুরমা নদীর সুনামগঞ্জ পয়েন্টে বুধবার বিকাল তিনটায় পানি বিপদ সীমার ১৮ সেন্টিমিটার অর্থাৎ ৭. ৯৮ সেন্টিমটার উপর দিয়ে যাচ্ছিল। উজানের আসাম—চেরাপুঞ্জির ঢলের পানি নামা অব্যাহত থাকায় জেলার ছাতক দোয়ারাবাজার উপজেলার সুরমাসহ সকল নদীর পানি উপচে নিম্নাঞ্চলে ঢুকছে। বুধবার সকাল বিকাল তিনটায় সুরমা নদীর ছাতক পয়েন্টে পানি বিপদ সীমার ১৫৮ সেন্টিমিটার অর্থাৎ ৯.৬৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে যাচ্ছিল।
ঢলের পানিতে সুনামগঞ্জে ২২০ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের যোগাযোগপথ—আঙ্গিনা প্লাবিত হয়েছে। স্কুলঘরে হাটু সমান পানি থাকায় ২৮টিতে সাময়িকভাবে পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের সূত্রে জানা য়ায়, মঙ্গলবার সকাল থেকে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জ সদরে ১৮, ছাতকে ১৭২, দোয়ারায় ২৪, তাহিরপুরে পাঁচ এবং শান্তিগঞ্জ উপজেলায় একটিসহ ১২০ টি স্কুল প্লাবিত হয়েছে। এরমধ্যে ২৮ টি স্কুলঘরে হাঁটু সমান পানি ওঠায় ওই বিদ্যালয়গুলোতে পাঠদান করা যাচ্ছে না। বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাঠদান সামগ্রী সরিয়ে রেখেছেন।
শহরতলির ইব্রাহিমপুরের বাসিন্দা নজরুলল ইসলাম বললেন, ঢলের পানিতে বিদ্যালয়ে হাঁটু সমান পানি। দীর্ঘদিন করোনার কারণে স্কুল বন্ধ ছিল। এখন আবার বিদ্যালয় বন্ধ হওয়ায় শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যাহত হবে।
শহরের তেঘরিয়া শহর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফেরদৌস আরা ইয়াসমিন বললেন, পাহাড়ি ঢলের পানি বিদ্যালয়ের ভিতরে প্রবেশ করেছে। বিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও কিছু আসবাবপত্র সরিয়ে রেখেছি। পানির ভয়ে অভিভাবকরা শিক্ষার্থীদের স্কুলে দিচ্ছেন না, শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে আসলেও পাঠদান করা যাচ্ছে না।
একই কথা জানালেন, শহরতলির গোধারগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইলোরা দে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এসএম আব্দুর রহমান জানালেন, জেলার ২৮ টি বিদ্যালয়ে পানি ওঠেছে, শিক্ষকরা স্কুলে যাচ্ছেন, শিক্ষার্থীরা আসতে না পারায় পাঠদান করা যাচ্ছে না। পানি কমা শুরু হয়েছে, বিদ্যালয় পরিস্কার করে দ্রুতই পাঠদান শুরু হবে।
এদিকে আকস্মিক ঢলের পানিতে সুনামগঞ্জ শহরের বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুলসহ পৌরসভা পরিচালনাধীন বেসরকারি স্কুল ও মাদ্রাসায় পাঠদান বন্ধ রয়েছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শামছুদ্দোহা জানালেন, বুধবার বিকাল তিনটায় সুরমা নদীর সুনামগঞ্জ পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ১৮ সেন্টিমিটার ছাতক পয়েন্টে ১৫৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে যাচ্ছিল। গেল ২৪ ঘণ্টায় দেশে মাত্র দুই মিলিমিটার বৃষ্টি এবং আসাম চেরাপুঞ্জিতে ২১৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী আগামী ২৪ ঘণ্টায় বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।