মোঃ হুমায়ূন কবীর ফরীদি# সুনামগঞ্জ আদালতে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ছাতক উপজেলার ১২ জনের নাম উল্লেখ সহ গং ব্যাক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বিস্বস্ত সুত্রে জানাগেছে, গত বুধবার (৪ ঠা অক্টোবর) সুনামগঞ্জের আমল গ্রহণকারী জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেছেন উপজেলার নোয়ারাই ইউনিয়নের রাজারগাঁও গ্রামের মৃত শহীদ উস্তার আলীর পুত্র মো. শহিদুল ইসলাম সরু।
বৃহস্পতিবার(৫ অক্টোবর) আদালত মামলাটির পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রেরণ করেন। এই মামলার অভিযুক্ত আসামিরা হলেন উপজেলার নোয়ারাই ইউনিয়নের আছদনগর গ্রামের মৃত মফিজ আলীর পুত্র আজিজুল রহমান (৭৩) ও ছাদক আলী (৭০), মৃত ওয়াজিদ আলীর পুত্র রমজান আলী (৬৮), মৃত চান্দ আলীর পুত্র সিরাজ আলী (৬৯), মৃত মন্তাজ আলীর পুত্র এতিম উল্লা (৭০), বেতুরা গ্রামের মৃত ছিদ্দিক আলীর পুত্র খোয়াজ আলী (৭৩), মৃত মুজেফর আলীর পুত্র মুসলিম আলী (৭০), মৃত মাহমদ আলীর পুত্র ইছবর আলী (৬৩), মির্জাপুর গ্রামের মৃত মছদ্দর আলীর পুত্র ইলিয়াছ আলী (৬৮), মৃত রুছমত আলী’র পুত্র ছুরত আলী (৬৪), মৃত ইছাক আলীর পুত্র ছুরাব আলী (৭৩),মৃত হুশিয়ার আলীর পুত্র ওয়ারিছ আলী (৬৯)। এছাড়া আরো ২৫-৩০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
উক্ত মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে আসামিগণ সরাসরি মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে অবস্থান করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর পক্ষে সক্রিয়ভাবে এলাকার বহু নিরীহ লোকজনদের ঘর-বাড়ি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুটপাট, চুরি ও অগ্নিসংযোগ করে। পরবর্তীতে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষাশ্রিত লোকদের পরিবারের সম্ভ্রমহানি, ধর্ষণ এবং খুন করে লাশ গুম করে এলাকায় মেশাকার তৈরি করে।
অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, আসামিগণ তৎকালীন শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান মৃত মতচ্ছির আলী (ফকির)-এর বাড়িতে গোপন বৈঠক করে সরাসরি বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। মামলার বাদী মো. শহিদুল ইসলাম সরু’র পিতা শহীদ উস্তার আলীসহ ওই সময় তাদের বাড়িতে আশ্রয় নেয়া মো. নুরুল ইসলামের পিতা শহীদ আব্দুছ ছামাদকে হাত বেঁধে ও চোখে কালোকাপড় বেঁধে নিয়ে যায়। এছাড়া গ্রামের আব্দুল মানিকের দাদী হাজী ফুলজান বিবি এবং শহীদ সোনা উদ্দিনসহ আরো ৪-৫ জনকে নোয়ারাই ইউনিয়নের আছদনগর (বেতুরা) গ্রামে সুরমা নদীরতীরে লঞ্চঘাটে একসাথে লাইনে দাঁড় করে ব্রাশফায়ারে প্রকাশ্য দিবালোকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। পরবর্তীতে সুরমা নদীতে লাশগুলো ভাসিয়ে দেয়া হয়।
বাদীপক্ষের আইনজীবী অরুণাভ দাশ সন্দিপের বরাত দিয়ে সুত্র জানান, ছাতক থানার নোয়ারাই ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের ১২ জন আসামিকে অভিযুক্ত করে মাননীয় আমলগ্রহণকারী জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, ছাতক, সুনামগঞ্জে মামলাটি দায়ের করা হয়। আদালত মামলাটির পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রেরণ করেছেন।
More News Of This Category