মু. জামাল হুসাইন
সহকারী শিক্ষক,
হাজী মন্তাজ উদ্দিন কে.জি এন্ড হাই স্কুল, জগন্নাথপুর, সুনামগঞ্জ
প্রিয় শিক্ষার্থী বৃন্দ ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা বইটিকে তোমরা হয়ত সহজ মনে করে থাক, কিন্তু তোমাদের ধারনা ভূল যদি ভাল ফলাফল আশা কর তবে তোমাকে প্রত্যেকটি বইকে সমান গুরুত্ব দিতে হবে ।
আজ কিছু সৃজনশীল প্রশ্ন তৈরী করে দিলাম, ধারাবাহিক ভাবে পাঠ নিয়ে আলোচনা করা হবে।
১। ইহুদী এবং খ্রিস্টানগণ বলে থাকে, যেহেতু মূসা (আঃ) এবং ঈসা (আঃ) হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর আগে আগমন করেছেন, যেহেতু তাদের মত এবং পথে চলা উচিৎ। তারা হযরত (সঃ) কে নবী হিসেবে মানতে নারাজ। অপরদিকে মুসলমানেরা মূসা (আঃ) এবং ঈসা (আঃ) কে যেমন নবী হিসেবে শ্রদ্ধা করে এবং তাঁদের ব্যাপারে কোন প্রকার কটূক্তি করেনা; আবার মুহাম্মদ (সাঃ) কে শেষ নবী হিসেবে মান-মর্যাদার দিক দিয়ে সকলের উপরের আসনে বসায়। এবং তারা মনে প্রাণে বিশ্বাস করেএকমাত্র নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এর অনুসরণ এবং অনুকরণের মাধ্যমেই উভয়কালের কল্যাণ নিহিত। আলস্নাহ তা’লা নিজেই ঘোষণা করেছেন,‘‘আমি তো আপনাকে সমগ্র মানবজাতির প্রতি সুসংবাদদাতা ও ভয় প্রদর্শনকারী হিসেবে প্রেরণ করেছি।
(ক) মুনাফিকদের চিহ্ন কয়টি?
(খ) মিথ্যা এবং প্রতারণাই মুনাফিকদের প্রধান কাজ —-ব্যাখ্যা কর।
(গ) কোন কোন নিদর্শনের পরিপ্রেক্ষিতে তুমি প্রমাণ করতে পার যে, হযরত মুহাম্মদ (আঃ) সর্বশেষ নবী?
(ঘ) উদ্দীপকে উল্লেখিত আয়াতটির ব্যাখ্যা কর।
২। টিটু এবং মিটু সহকর্মি। তারা ভাল বন্ধুও বটে। টিটু সাহেব মসজিদে নামায পড়তে যাওয়ার সময় মিটু সাহেবকে ডাকেন। আপনি গিয়ে আসুন। টিটু সাহেব একদিন তাকে জুরাজুরি করে বললেন, আপনি কি মুসলমান নন ? তিনি বলেন, অবশ্যই । তাহলে এই যে, নামায পড়ছেন এবং অন্যান্য ইবাদত ও করছেন, আপনি কি বেহেশতে যেতে পারবেন ? তিনি বললেন, আমি কি কোন পাপ করি? যদি কোন পাপ না করে থাকি, তাহলে বেহেশতে যেতে পারবনা কেন?
(ক) আসমাউল হুসনার মাধ্যমে আমরা তা’লার কি জানতে পারি?
(খ) শাফায়াত করার প্রয়োজন কেন ব্যাখ্যা কর।
(গ) পরকালে জান্নাত লাভ করার জন্য কোন প্রকারের ইবাদতগুলো মিটু সাহেবের করা উচিৎ ব্যাখ্যা দাও।
(ঘ) ইবাদত করা কিংবা পাপ না করা জান্নাত লাভের মাপকাঠি হতে পারে কিনা বিশেস্নষণ কর।
৩। মকবুল সাহেব অনেক বড় লোক। প্রতি বৎসর হজ্জ করেন। কিন্তু যাকাত দেয়ার ব্যাপারে হাত তার অনঢ়। তার বন্ধু মাস্টার শুক্কুর সাহেব তাকে বলেন, দোস্ত হজ্জ করলে হাজী নামটাই ধারণ করতে পারবি। কিন্তু যাকাত না দিলে আল্লাহর রহমত, বরকত হাসিল করতে পারবিনা। তোর নিকট যে সম্পদ তা আমানত স্বরূপ। এগুলোর মধ্যে শুধু তোর অধিকার নেই; গরীর দুস্থদের ও অধিকার রয়েছে। ইসলামে পুজিবাদ নেই। আর তাই ইসলামে যাকাত প্রথার মাধ্যমে অথনৈতিক ভারসাম্য রক্ষা করা হয় ।
(ক) মহিলা হাজী হলে তার সফরসঙ্গী হবেন কে?
(খ) হজ্জের আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে কি প্রমাণপাওয়া যায় ব্যাখ্যা কর।
(গ) একজন সাচ্চা মুসলমান হতে হলে তাকে কোন কাজগুলো অবশ্যই পালন করতে হবে? ব্যাখ্যা দাও।
(ঘ) যাকাত প্রথার মাধ্যমে অর্থনৈতিক ভারসাম্য রক্ষিত হয়-বিশ্লেষণ কর।
৪। হুদা সাহেব পবিত্র হজ্জ পালনের সময় হজ্জের সময়কার অপরূপ দৃশ্য মনোযোগ সহকারে অবলোকন করছিলেন। সকল হাজী একই রকম পোষাক এবংএকই রকম তাকবীর উচ্চারণে মশগুল। শুভ্রতায়, একতায় এবং ভ্রাতৃত্বে সবাই একা কার। সকলের মুখে এবং হৃদয়ে এক মহান আল্লাহর নাম। যেন সাম্য ও ভ্রাতৃত্বের এক মহা সম্মিলন। হজ্বে মুসলমানদের মধ্যে সৃষ্টি হয় প্রাণচাঞ্চল্য। আর মুসলিম জাহানের প্রত্যেক অঞ্চলে সৃষ্টি হয় এক অভিনব ঐক্যের আলোড়ন।
(ক) আনুগত্য ও আত্মসমর্পনের মূর্ত প্রতীক ছিলেন কারা?
(খ) কুরবানীর মধ্যে কিসের স্মৃতি বহন করে ব্যাখ্যা কর ।
(গ) হজ্জের শিক্ষা মুসলিমদের ঐক্য, ভ্রাতৃত্ব সুগঠিত করার ব্যাপারে কি রকম ভূমিকা তুমি গ্রহণ করতে পার এ ব্যাপারে তোমার অভিমত ব্যাখ্যা কর।
(ঘ) হজ্জ ভ্রাতৃত্বের এক মহা সম্মিলন— –বিশেস্নষণ কর।
৫। বাবুল সাহেব আমেরিকায় থাকেন। এদেশে আসার পর যার সঙ্গেই দেখা হোকনা কেন অর্থ সম্পর্কিত কথা ছাড়া আর কোন কথাই তিনি বলেননা। কিভাবে যেনতেন প্রকারে অর্থ কামাই করতে হয় এবং কিভাবে ভোগ বিলাসে থাকতে হয় ইত্যাদি বিষয় আসয় নিয়েই সর্বদা মেতে থাকেন। ধর্মকর্মের কথা বললে তার গা জ্বালা দিয়ে উঠে। তিনি বলেন, দেড় হাজার বছর পূর্বের মরুস্থানের নিয়ম কানুন আজকের এই অণু পরমাণুর যুগে কিভাবে তোমরা অনুসরণ করতে চাও আমার বোঝে আসেনা। তোমরা সবাই স্টুপিড। বড় ভাই তালেব বলেন, তোর পবিত্র কোরআন শরীফ অধ্যয়ন করা উচিৎ। পুজিবাদ আর ভোগবাদ তোকে আকণ্ঠ নিমজ্জিত করে রেখেছে। তুই জানিসনা পবিত্র কোরআন শরীফ সর্বজনীন এবং সর্বকালীন মহাগ্রন্থ।
(ক) পবিত্র কোরআন শরীফ কত বছরে নাযিল হয়?
(খ) পবিত্র কুরআন কে কুরআন নামকরণের স্বার্থকতা বিশেস্নষণ কর।
(গ) পবিত্র কোরআন শরীফ দ্বারা সকল প্রকার সমস্যার সমাধান করা যাবে কি? তোমার অভিমত ব্যক্ত কর।
(ঘ) কুরআন সর্বজনীন ও সর্বকালীন মহাগ্রন্থ-বিশ্লেষণ কর।
৬। ক্লাসে একদিন একজন ছাত্রী স্যারকে জিজ্ঞাসা করল, স্যার আল-কোরআন আল্লাহর বাণী। সুতরাং কোরআনে যা আদেশ করা হয়েছে তা পালন করা আবশ্যক। কিন্তু হাদীসতো আর আল্লাহর বাণী নয়; সুতরাং হাদীসের আদেশ আমাদের কি হিসেবে পালন করতে হবে? স্যার উত্তর দিলেন, রাসূল করিম(সাঃ) যা বলতেন তা নিজ থেকে কোন কিছু বলতেননা আল্লাহতা’লা যা বলতে বলতেন শুধু তাই তিনি বলতেন। এদিক থেকে পবিত্র হাদীস শরীফও আলস্নাহর বাণী। আর মনে রাখবে পবিত্র হাদীস শরীফ ছাড়া কোরআন বুঝা কিংবা ব্যাখ্যা করা আদৌ সম্ভব নয়।
(ক) তাজবীদ শব্দের অর্থ কি?
(খ) কুরআন মাজীদ তিলাওয়াতের ফযীলাত বর্ণনা কর।
(গ) হাদীস কোরআন শরীফের পরিপূরক-এ ব্যাপারে তোমার যুক্তি উপস্থাপন কর।
(ঘ) হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) আলস্নাহর নির্দেশ ছাড়া কোন কিছু বলতেননা-বিশ্লেষণ করে বুঝিয়ে দাও।
৭। এক মজলিশে একজন ইসলামী বিশেষজ্ঞকে একজন বক্তা প্রশ্ন করল, আপনিতো ইসলাম সম্পর্কে অনেক অনেক বড় বড় কথা বলেছেন, বলুনতো ইসলাম নারীকে কী রকম অধিকার দান করেছে? অথচ পশ্চিমা দেশে দেখুন নারী আর পুরুষ সমানতালে একে অপরের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছে। বক্তা উত্তর দিলেন, আপনি কি কখনও জেনেছেন, ইসলাম নারীকে কি মর্যাদা দান করেছে বা অধিকার দিয়েছে? আপনি জেনে আনন্দিত হবেন যে, ধর্ম হিসেবে ইসলাম যতটুকু মর্যাদা নারীকে দান করেছে পৃথিবীর কোন ধর্ম কিংবা আইন এখনও দিতে পারেনি। আর পশ্চিমা বিশ্ব নারীকে সম্মান বা অধিকার দেয়ার নাম করে লুট করে নিচ্ছে তাদের মান মর্যাদা।
(ক) উন্নত জাতির জীবনীশক্তি কি?
(খ) সকল মানুষ ভাই ভাই-কি রকম ভাই ব্যাখ্যা দাও।
(গ) বর্তমান সমাজে নারীকে যথাযোগ্য মর্যাদা দান করতে একমাত্র ইসলামই-তোমার স্বপক্ষেযুক্তি উপস্থাপন কর।
(ঘ) ইসলামে নারীর মর্যাদা কতটুকু দেয়া হয়েছে তা পবিত্র কোরআন ও হাদীসের আলোকে বিশেস্নষণ করে বুঝিয়ে দাও।
৮। বর্তমান সময়ে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে সন্ত্রাস। সন্ত্রাসের আছে নানা ধরন। ব্যাক্তি হতে আন্তর্জাতিক পর্যন্ত এটি বিস্তার করে আছে। এর ভয়াবহতায় মানুষ এখন বিপর্যসত্ম। বিভিন্ন আইন প্রণয়ন এবং প্রশাসনিক তৎপরতা সত্ত্বেও এই ভয়াবহতা কমছেনা; বরং বেড়েই চলেছে। পবিত্র কোরআন শরীফে এই ফিতনাকারীদের সম্পর্কে কঠোর শাস্তির কথা ঘোষিত হয়েছে। আলস্নাহর বাণী-ফিতনা হত্যার চেয়ে মারাত্মক। ইসলামী বিশেষজ্ঞগণ মনে করেন পবিত্র কোরআন শরীফ এবং হাদীস শরীফ অনুসরণ করে সন্ত্রাস সমূলে নির্মূল করা সম্ভব।
(ক) উৎকোচ’-এর আরবী প্রতিশব্দ কি?
(খ) ঘুষ একটি সামাজিক অপরাধ কেন ব্যাখ্যা কর।
(গ) সন্ত্রাস নির্মূল করতে ইসলামী বিধান বর্তমানে কিভাবে প্রয়োগ করা যাবে তার একটি রূপরেখা অঙ্কন কর।
(ঘ) ফিতনা হত্যার চেয়ে জঘন্য কেন বিশেস্নষণ কর।
৯। একদিন ব্যথিত মনে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)কে তাঁর নিজ জন্মভূমিকে ত্যাগ করতে হয়েছিল। আজ দশহাজার সাহাবী নিয়ে তিনি যাচ্ছেন মক্কা জয় করার জন্য। কোন প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই তিনি মক্কাশরীফে বিজয়ীবেশে প্রবেশ করেন। সকলে তাঁর কাছে আত্মসমর্পণ করল। তিনি ঘোষণা করলেন, আজ তোমাদের বিরম্নদ্ধে কোন অভিযোগ নেই, যাও তোমরা মুক্ত ও স্বাধীন। এমনকি ইসলামের অন্যতম শত্রম্ন আবু সুফিয়ানকে পর্যমত্ম তিনি ক্ষমা করে দেন। এমনকি তার ঘরেযদি কেউ যদি আশ্রয় গ্রহণ করে সেও ক্ষমা এবং নিরপত্তা পাবে। এমন ক্ষমার নজির দুনিয়াতে আর একটাও নেই। সকল মক্কাবাসীকে তিনি ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ করেন।
(ক) কোন নারী জীবনে বিবাহ করেননি?
(খ) হযরত আয়িশা (রাঃ) এর চরিত্রে কি কি গুণের সমাবেশ ঘটেছিল বর্ণনা কর।
(গ) মক্কা বিজয়ের আলোকে আমরা বর্তমান সময়ে ও এরকম উদারতাকে কাজে লাগিয়ে দুশমনকে দোসত্ম করতে পারি ব্যাখ্যা দাও।
(ঘ) হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এর অনুপম ক্ষমার নিদর্শন মক্কা বিজয়ে পরিলক্ষিত হয়-মক্কাবিজয়ের আলোকে বিশেস্নষণ কর।