বিশেষ প্রতিনিধি:- পরিকল্পনা মন্ত্রী এমএ মান্নান এমপির প্রচেষ্টায় জেলার তিন উপজেলা শান্তিগঞ্জ, জগন্নাথপুর, ছাতককে প্রায় অর্ধশত কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। জেলার শান্তিগঞ্জ, জগন্নাথপুর ও ছাতক উপজেলার ১৭টি জায়গায় সড়ক, কালভার্ট ও সেতু নির্মাণের জন্য আলাদা আলাদাভাবে ৪৮ কোটি ৮৩ লক্ষ টাকার অনুমোদন দেয় এলজিইডি। প্রকল্পের অনুমোদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুনামগঞ্জ জেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুব আলম।
জানা যায়, দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের কাছে একটি চাহিদা পত্র পাঠান এবং প্রকল্পগুলোর অনুমোদের জন্য বিশেষ অনুরোধও করেন। তাঁর সক্রিয় তৎপরতায় দ্রুততম সময়ের মধ্যেই প্রকল্পগুলো অনুমোদন পায়।
অনুমোদনপ্রাপ্ত প্রকল্পগুলো হচ্ছে- শান্তিগঞ্জের গনিগঞ্জ-তেহকিয়া-শিমুলবাক গ্রামের রাস্তার শিমুলবাক বাজার সংলগ্ন নিতাইগাঙ্গের উপর ৮০ মিটার গার্ডার সেতু নির্মাণ। যার খরচ ধরা হয়েছে ৭ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা। পশ্চিম বীরগাঁও ইউনিয়নের বড়মোহা থেকে বসিয়াখাউরী রাস্তায় চৈতাখালীর উপর ২০ মিটার দৈর্ঘ্যরে গার্ডার সেতু নির্মাণ। যার নির্মাণ ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছে ১ কোটি ৯৭ লক্ষ টাকা। ৮ কোটি ১৬ লক্ষ টাকা ব্যয়ে রজনীগঞ্জ বাজার ভায়া
ডুংরিয়া-জয়সিদ্ধি-ঠাকুরভোগ রাস্তা নির্মাণের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ছয়হারা থেকে বাংলাবাজার ভায়া আমড়িয়ার রাস্তায় ১৫ মিটার সেতু নির্মাণের জন্য ৯৫ লক্ষ টাকার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। মীর্জাপুর থেকে ফতেহপুর ভায়া মানিকপুর রাস্তায় ৩ মিটার কালভার্ট নির্মাণে ১৫ লক্ষ টাকা ও উপজেলা হেডকোয়ার্টার থেকে রজনীগঞ্জ বাজার ভায়া ডুংরিয়া জয়সিদ্ধি ঠাকুরভোগ বাজারের রাস্তা প্রটেক্টিভওয়ার্ক এন্ড ব্লক নির্মাণের জন্য ২ কোটি টাকা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। শান্তিগঞ্জ উপজেলায় ৬ প্রকল্পে মোট ২০ কোটি ৮৩ লক্ষ টাকার প্রকল্প ব্যয় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
জগন্নাথপুর উপজেলায় মোট চারটি প্রকল্পের অনুমোদন হয়েছে বলে জানা গেছে। প্রকল্পগুলো হচ্ছে- নিউ মার্কেট-পাইকপাড়া মিলিটারি খালের উপর ৪০ মিটার দীর্ঘ সেতু। যারা নির্মাণ খরচ ৩ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা।
জয়দা-মিঠাভরাং রোডে ৬০ মিটার দীর্ঘ সেতুর জন্য ৫ কোটি ৯০ লক্ষ, এরালিয়া-ইসলামপুর-আলীপুর রাস্তায় ৩৫ মিটার বক্স কালবার্র্টের জন্য ১ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা ও পাগলা-জগন্নাথপুর রাস্তা থেকে এরালিয়া বাজার রাস্তায় ৩০ মিটার দীর্ঘ বক্স কালভার্টের জন্য ১ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকা নির্মাণ খরচ ধরা হয়েছে। জগন্নাথপুরের চার প্রকল্পের জন্য মোট ১২ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকা নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে।
ছাতক উপজেলার ৭ প্রকল্প হলো- দেবেরগাঁও-কান্দিপাড়া রাস্তায় বোকা নদীর উপর ৭৫ মিটার দীর্ঘ সেতুর জন্য ৭ কোটি টাকা, আরএইচডি (জাতুয়া)- তরতরমদন রাস্তায় ৩০ মিটার গার্ডার সেতুর জন্য ২ কোটি ৮০ লক্ষ, খারাই গ্রামের রাস্তা নির্মাণের জন্য ২ কোটি ১৭ লক্ষ, কালীপুর-বিনন্দপুর রাস্তার জন্য ২ কোটি ১৭ লক্ষ টাকা, কালীপুর-বিনন্দপুর রাস্তায় ২০ মিটার বক্স কালভার্টের জন্য ১ কোটি ১ লক্ষ টাকা, খারাই গ্রামের রাস্তায় প্রটেকটিভওয়ার্ক এন্ড ব্লকের জন্য ১০ লক্ষ টাকা ও কালিপুর-বিনন্দপুর রাস্তায় প্রটেকটিভওয়ার্ক এন্ড ব্লকের জন্য আরও ১০ লক্ষ টাকা নির্মাণ খরচ ধরা হয়েছে। ছাতক উপজেলার সাত প্রকল্পের জন্য মোট ১৫ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের আন্তরিক প্রচেষ্টায় এমন উন্নয়ন কর্মকা-ের অনুমোদন হওয়ায় খুশি তিন উপজেলাবাসী। শান্তিগঞ্জের জয়কলস ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল বাসিত সুজন বলেন, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সুনামগঞ্জের উন্নয়নে যথেষ্ট আন্তরিক। সুনামগঞ্জ জেলার জন্য তিনি কাজ নিয়ে আসেন। এই সরকারের প্রধান জননেত্রী শেখ হাসিনাও হাওরাঞ্চলের উন্নয়নে যথেষ্ট আন্তরিক। আমরা শেখ হাসিনা ও পরিকল্পনামন্ত্রী মহোদয়ের কাছে কৃতজ্ঞ।
জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান বিজন কুমার দেব বলেন, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সুনামগঞ্জ-৩ আসনের সামগ্রিক উন্নয়নে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছেন। আমরা তার প্রতি কৃতজ্ঞ।
সুনামগঞ্জ জেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুব আলম বলেন, আমরা অতিদ্রুত প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করবো। আমাদের চেষ্টা থাকবে আগামী ছয়মাসের মধ্যে সবগুলো প্রকল্প শেষ করতে।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, আমি কাজের মানুষ। আমি চেয়েছি, সরকার দিয়েছে। এ সরকার থাকলে আমরা আরও উন্নয়ন করতে পারবো। সাধারণ মানুষ খুশি হলেই আমি খুশি, সরকারও খুশি। সাধারণ জনগণের প্রতি আমার আহ্বান, শেখ হাসিনার সরকারকে পুনরায় নির্বাচিত করুন, দেশের আরও উন্নয়ন হবে। দেশে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় থাকলে দেশ আরও এগিয়ে যাবে।