দৃক নিউজ২৪ ডেস্ক:- লিওনেল মেসি কী পারবেন? এটাই এখন ফুটবল বিশ্বের একমাত্র প্রশ্ন। তার মত বিশ্বমাতানো ফুটবলারের জন্মই হয়েছে খুব কম। পেলে না ম্যারাডোনা- ফুটবলের সর্বকালের সেরার এই বিতর্কও অনেকটা ঘুচিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু মেসির নামের পাশে যে ক্লাবের শিরোপা ছাড়া আর কিছুই নেই!
২০১৪ বিশ্বকাপের আগেও একবার ফিফা ব্যালন ডি’অর জেতার পর মেসি বলেছিলেন, ‘এগুলোর এখন কোনো মূল্যই আর আমার কাছে নেই। আমার চিন্তা-ভাবনাজুড়ে এখন শুধুই আর্জেন্টিনার হয়ে কোনো একটি ট্রফি জেতার স্বপ্ন।’ শুধু মেসি কেন, সবারই এক কথা, সর্বকালের সেরা হতে হলে মেসির নামের পাশে জাতীয় দলের হয়ে একটি শিরোপা থাকতেই হবে।
আজও ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনো বলে দিয়েছেন, মেসিকে সর্বকালের সেরা হতে হলে একটি শিরোপা অন্তত জিততেই হবে। এখনও তার বিশ্বকাপ জেতার সুযোগ এবং সামর্থ্য সবই আছে। ইনফান্তিনো নিজেই চান, রাশিয়া বিশ্বকাপে খেলুক আর্জেন্টিনা এবং মেসি।
সেই অসাধ্য কাজটাই শেষ পর্যন্ত করতে পারবেন মেসি? কোটি টাকার প্রশ্ন। কারণ, মেসিদের বিশ্বকাপ ভাগ্য এখন পুরোপুরি নির্ভর করছে ইকুয়েডরের ওপর। লাতিন আমেরিকা অঞ্চলে যারা রয়েছে আট নম্বর স্থানে এবং যাদের আগামী বিশ্বকাপ খেলার কোনোই সম্ভাবনা নেই। সেই ইকুয়েডরই বাছাই পর্বের প্রথম ম্যাচেই বুয়েন্স আয়ার্সে স্বাগতিক আর্জেন্টিনাকে ২-০ গোলে হারিয়ে এসেছিল।
এবার মেসিদের খেলতে হবে ইকুয়েডরের মাঠে। দেশটির রাজধানী কুইটোয়। সমূদ্রপৃষ্ঠ হতে যার উচ্চতা ৯ হাজার ফুটেরও বেশি। এত উুঁচুতে গিয়ে সত্যি সত্যি স্বপ্ন পূরণ করতে পারবেন মেসিরা? নাকি বিশ্বকাপের বাছাই পর্ব থেকে ছিটকে পড়ার হতাশা নিয়েই দেশে ফিরে আসতে হবে তাদের? এটাও অনেক বড় প্রশ্ন এখন।
২০১৪ বিশ্বকাপের ফাইনালে দলকে তুলে দিয়েছিলেন মেসি। সেবার ফাইনালে জার্মানির মুখোমুখি হয়ে অতিরিক্ত সময়ের একমাত্র গোলে হারতে হয়েছিল লা আলবেসেলেস্তেদের। বিশ্বকাপের একেবারে কাছে গিয়েও ট্রফিটা ছোঁয়া হলো না মেসির। এরপর ২০১৫ এবং ২০১৬ সালে পরপর দু’বার টানা কোপা আমেরিকার ফাইনালে উঠে হারতে হয়েছিল চিলির কাছে।
জাতীয় দলের হয়ে শিরোপাই যেন একটি বড় রহস্য হয়ে থাকল মেসির কাছে; কিন্তু এবার তো ফাইনাল দুরে থাক, বিশ্বকাপেই খেলার স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে না। ১৯৭০ সালের পর এই প্রথম বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্ব থেকে ছিটকে পড়ার পথে রয়েছেন তিনি। বিশ্বকাপের ফাইনাল তো, একেবারে শেষ পর্যায়ের খেলা। যতটা না টেনশন কাজ করে, তার চেয়েও বেশি সাসপেন্স। কিন্তু এবার! পুরোপুরি সম্মান রক্ষারই ম্যাচ যেন। বিশ্বকাপের ফাইনালের চেয়ে কঠিন। পরিস্থিতি, আবহাওয়া, পরিবেশ, প্রতিপক্ষ এবং উচ্চতা- সব মিলিয়ে মেসিদের কাছে এই ম্যাচটি এখন সত্যিকারার্থেই বিশ্বকাপ ফাইনালের চেয়ে কঠিন। কারণ, এই ম্যাচ জিততে না পারলে তো বিশ্বকাপেই খেলা হবে না আর মেসিদের।
ইকুয়েডরের বিপক্ষে মেসি এর আগে মোট ৬বার বিশ্বকাপের বাছাই পর্বের ম্যাচ খেলে জিতেছে মাত্র দুটিতে। তবে, ১৯৯৬ সালে বর্তমান ফরম্যাটে বিশ্বকাপ বাছাই পর্ব শুরু হওয়ার পর থেকে ইকুয়েডরের মাঠে গিয়ে মাত্র একবার জিততে পেরেছিল আর্জেন্টিনা। তাও সেটা ২০০১ সালে, আজ থেকে ১৬ বছর আগে। ২০০১ সালের পর ইকুয়েডরের মাঠে গিয়ে আর কোনো ম্যাচ জিততে পারেনি আর্জেন্টাইনরা।
তবে আর্জেন্টিনার জন্য একটা প্লাস পয়েন্ট হতে পারে কোচ হোর্হে সাম্পাওলি। তিনি ইকুয়েডরকে বেশ ভালোভাবেই চেনেন। কারণ, ২০১০ সালে দেশটির একটি ক্লাবে কোচিং করিয়েছেন তিনি। সেখানকার পরিবেশ, আবহাওয়া এবং খেলার ধরনও তার জানা। সুতরাং, মেসিদেরকে সেভাবেই পরিচালিত করতে পারবেন তিনি।
More News Of This Category