কালের ঢোল:- বিএনপি দলের নীতিনির্ধারক মহল বলছে, মূল নির্বাচন নিয়ে এখনো বিস্ময়ের ঘোর কাটিয়ে ওঠা যাচ্ছে না। এ অবস্থায় নতুন করে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে ভাবনার অবকাশ নেই। সেইসঙ্গে এখনো সংসদে যাওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। এমনকি এসব বিষয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কোনো সিদ্ধান্তও আসেনি।মার্চে অনুষ্ঠেয় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এখন পর্যন্ত না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি।
সর্বশেষ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের প্রতি অভিযোগের পাহাড় তুলে বিএনপি এ নির্বাচনে না যাওয়ার পক্ষে। বিএনপি নেতা-কর্মীদের মামলার জামিন নিয়েও দলের মধ্যে টানাপড়েন চলছে, থমকে গেছে দলীয় কার্যক্রম। এমনকি ২৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় গাইবান্ধা-৩ আসনের নির্বাচনও বর্জন করেছে দলটি।এরই মধ্যে কেন্দ্র থেকে বিভিন্ন মামলার জামিন নেওয়ার বিষয়ে মাঠকর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এজন্য সংশ্লিষ্ট এলাকার বিএনপি প্রার্থীদের সহায়তা করতে বলা হয়েছে। আর যে এলাকায় বিএনপির প্রার্থী নেই, সেখানে দলের সিনিয়র নেতাদের মামলার বিষয়টি দেখার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন বিএনপির হাইকমান্ড।
এ ছাড়া মামলার জামিনের বিষয়ে মাঠকর্মীদের আইনি সহায়তা দিতে বিএনপির আইনজীবীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হাই কোর্টে মামলা লড়ার ক্ষেত্রেও থাকছে আইনজীবীদের আলাদা টিম। এদিকে বিএনপির আরেক সূত্র জানিয়েছেন, উপজেলা নির্বাচনে দলীয়ভাবে অংশ না নিলেও কেউ স্বতন্ত্রভাবে অংশগ্রহণ করলে, দলের ভূমিকা কী হবে সে বিষয়েও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। ফেব্রুয়ারির শুরুতে উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর বিএনপি অধ্যুষিত এলাকায় স্বতন্ত্রভাবে ভোটে যাওয়া হবে কিনা, তা পরিবেশ দেখেই স্থানীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নেবে দলটি।সংসদে যাওয়া-না যাওয়ার বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমাদের কথা পরিষ্কার। যে নির্বাচনের ফলাফল আমরা প্রত্যাখ্যান করেছি সে নির্বাচনের সঙ্গে জনগণের কোনো সম্পর্ক নেই।
জনগণ পুরোপুরিভাবে যা বর্জন করেছে এবং নির্বাচনের ফলাফল কখনই মেনে নেয়নি সে নির্বাচনের ফলাফলের ভিত্তিতে সংসদ কিংবা সরকার গঠন করার অধিকার কারও নেই।’তিনি বলেন, ‘আমরা এ নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছি। পার্লামেন্ট গঠন প্রত্যাখ্যান করেছি। কাজেই প্রত্যাখ্যাত এ সংসদে প্রশ্নই ওঠে না বিএনপির অংশ নেওয়ার। বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকেও একই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’ বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নিতাই রায়চৌধুরী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে দলীয়ভাবে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে সর্বস্তরের নেতা-কর্মী ও সমর্থকের মতামত অনুসারে এটুকু বলতে পারি যে, এ সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। প্রার্থীরাও রাজি নন। মানুষেরও আগ্রহ নেই। কারণ ৩০ ডিসেম্বর রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে জাতীয় নির্বাচনে সারা দেশে ভোট ডাকাতির যে মহোৎসব হয়েছে তা শুধু দেশবাসীই নয়, বিশ্ববাসী অবাক বিস্ময়ে দেখেছে।’
আদালতে বিএনপি নেতা-কর্মীদের জামিন না পাওয়া এবং কর্মীদের প্রতি নেতাদের সহযোগিতার অভাব সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘তৃণমূল নেতা-কর্মীদের প্রতি কেন্দ্রীয় নেতাদের সহযোগিতার কোনো অভাব নেই। দু-একটা জায়গায় হয়তো একটু-আধটু সমন্বয়ের অভাব থাকতে পারে। সেগুলোও সমাধানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা, আদালতে বিএনপি নেতা-কর্মীরা এখন ঠিকমতো বিচার পাচ্ছেন না। হাজার হাজার গায়েবি মামলা দেওয়া হয়েছে।
More News Of This Category