দৃক নিউজ২৪ ডেস্ক:- দেবী দুর্গার আগমনে আনন্দ আজ প্রতিটি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ঘরে ঘরে। তাই তো দেবীর আগমনে এখন প্রতিমার গায়ের শেষ তুলির আঁচড় দিচ্ছেন প্রতিমা শিল্পীরা। ব্যস্ত মায়ের ভক্তরা। সেই সঙ্গে বাড়ি-ঘর পরিষ্কার আর নতুন সাজে নিজেকে সাজিয়ে তুলতে ব্যস্ত সবাই।
সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার ভদ্রঘাট পাল বাড়িগুলোতে বইছে উৎসবের হাওয়া। আসছে মধ্য অক্টোবরেই দেবীর বোধন। তাই পালবাড়ির চারিদিকেই এখন ব্যস্ততার ছাপ। পালবাড়িগুলোর সবাই ব্যস্ত কাদামাটি আর রং তুলির আচড়ে দেবী দুর্গাকে সাজিয়ে তুলতে। শহরের মহাপ্রভুর আখড়া, কালীবাড়ী গোবিন্দ মন্দির, স্টেশনরোড কালিমাতা মন্দির, মাড়োয়ারীপট্টি মন্দির, বানিয়াপট্টি কালিমাতা মন্দির, ফড়িয়াপট্টি কালিমাতা মন্দির, গোশালা কালিমাতা মন্দির, বাহিরগোলা কালিমাতা মন্দির প্রাঙ্গণসহ সদর উপজেলার প্রায় শতাধিক পূজা মণ্ডপে এখন নানা আকার আর ঢংয়ের দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশ আর মহিষাসুর-সঙ্গে দেবীর বাহন সিংহকে সারি সারিভাবে সাজানো হচ্ছে।
কামারখন্দ উপজেলার ভদ্রঘাটের বিভিন্ন পালবাড়ি ও মন্দির ঘুরে দেখা যায়, হাতের নিপুণ কারিগরিতে জোরেশোরেই দুর্গা প্রতিমা তৈরির কাজ চলছে। নরম কাদা-মাটি দিয়ে শৈল্পিক ছোঁয়ায় গড়ে তোলা দশভুজা দেবী দুর্গার প্রতিমায় পালপাড়ার প্রায় প্রতিটা বাড়ি ভরে গেছে। প্রতিমা তৈরির পর পরই তা রূপায়নের কাজ শুরু হবে। নানান রঙ আর তুলির আঁচড়ে ফুটিয়ে তোলা হবে দেবীর প্রতিচ্ছবি। তাই পাল বাড়িতে ঘুম নেই।
প্রতিমা শিল্পী রতন পাল জানান, তার বাবা শৈল্পিক হাতে প্রতিমা তৈরি করতেন। ছোটবেলা থেকেই প্রতিমা তৈরির কাজ দেখতে দেখতে তার বেড়ে ওঠা। এমন কী প্রতিমা তৈরির নেশা তাকে বই-পত্রে মন বসাতে দেয়নি। তাই মাত্র দশ বছর বয়সেই বাবার কাছে থেকে দীক্ষা নেন তিনি। শেখেন কাদা-মাটি আর কাঠ-খড় দিয়ে প্রতিমা গড়ার। এবার পূজায় তার তৈরি একেকটি প্রতিমা ১৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হবে।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সুকান্ত সেন জানান, এবার সিরাজগঞ্জ জেলা জুড়ে প্রায় পাঁচ শতাধিক মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। সুষ্ঠ-সুন্দর ও উৎসবমুখর পরিবেশে এ বছর দুর্গাপূজা আয়োজনের জন্য এরই মধ্যে পূজা উদযাপন পরিষদের পক্ষ থেকে সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া পূজা মণ্ডপগুলোর সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ও অন্যান্য সুবিধা নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশের সঙ্গে মতবিনিময় করা হচ্ছে।
প্রতিমা তৈরির কারিগরদের পাশাপাশি দুর্গাপূজায় সার্বিক নিরাপত্তা প্রদানের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে উল্লেখ করে সিরাজগঞ্জ সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ দাউদ বলেন, আশা করছি প্রতি বছরের মতো এবারও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মধ্যদিয়ে সিরাজগঞ্জে শান্তিপূর্ণ ও উৎসব মুখর পরিবেশে দুর্গোৎসব উদযাপিত হবে।
More News Of This Category