,
শিরোনাম
জগন্নাথপুরে জাতীয় ইমাম সম্মেলন সম্পন্ন হযরত মাওলানা মরহুম এমদাদুর রহমান (রঃ) এর ঈসালে সাওয়াব উপলক্ষে মীলাদ ও দোআ মাহফিল এবং অসহায় গরীবদের মাঝে কাপড়  বিতরণ ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর ২০২৩ শিক্ষা বর্ষের শ্রেষ্ঠ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ‌্যে পুরষ্কার বিতরণ ও আলোচনা সভা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-আন্দোলনকে কেন্দ্র করে জগন্নাথপুরে মামলা দায়ের বাতিল হতে পারে ১৫ আগস্টের সরকারি ছুটি ইন্টারনেট শাটডাউন: তদন্তে বেরিয়ে এলো যাদের নাম শেখ হাসিনাসহ সাতজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দুর্নীতির মামলা থেকে খালাস পেলেন ড. ইউনূস আমার মায়ের পদত্যাগের বিষয়ে দেয়া বিবৃতি পুরোপুরি মিথ্যা: জয় চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিলসহ উপদেষ্টা পরিষদের ৮ সিদ্ধান্ত

স্বপ্ন দেখি বিশ্বকাপ ট্রফি উঁচিয়ে ধরেছি : মেসি

দৃক নিউজ২৪ ডেস্ক:- লিওনেল মেসি, তর্কসাপেক্ষে বর্তমান বিশ্বের সেরা ফুটবলার। ক্লাব বার্সেলোনার হয়ে এমন কিছু নেই যা অর্জন করেননি আর্জেন্টাইন খুদে জাদুকর। আক্ষেপ শুধু একটাই, জাতীয় দলের হয়ে এখনও বিশ্বকাপ ট্রফি জিততে পারেননি। এবারই হয়তো শেষবারের মতো বিশ্বকাপে দেখা যাবে খুদে জাদুকরকে। শেষবেলায় মেসির চোখে একটাই স্বপ্ন, বিশ্বকাপ ট্রফিটা হাতে নেয়া। আমেরিকা টিভিতে দেয়া এক সাক্ষাতকারে শুধু বিশ্বকাপ নিয়ে নয়, নিজের ক্যারিয়ারসহ আরও অনেক কিছু নিয়ে বিশদ কথা বলেছেন মেসি। সেই সাক্ষাতকারটিই জাগো নিউজের পাঠকদের জন্য…

প্রশ্ন : কিভাবে স্পেনে মানিয়ে নেওয়া?
মেসি : আমার বাবা-মা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিল যে, মা বোনকে সাথে নিয়ে তারা আর্জেন্টিনায় চলে যাবে, যাতে করে বোন স্কুলে যেতে পারে এবং স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারে। ঘটনা হচ্ছে, বার্সেলোনায় চলে আসাটা আমার জন্য তেমন কষ্টকর ছিল না। আমি দ্রুতই মানিয়ে নেই। আমার বড় ভাইরাও চেয়েছিল আর্জেন্টিনায় চলে যেতে।

আমার বোন হল সবার ছোট। ওর এখানে মানিয়ে নিতে সমস্যা হচ্ছিল খুব। একদিন বাবা আমার সাথে বসে ছিলেন। তখন জিজ্ঞেস করে বসলেন, ‘আমরা কি করবো? শেষবারের মত তোমাকেই জানাতে হবে। তুমি যাই বলো না কেন কষ্ট হলেও সেটাই মেনে নিব আমরা।’ আমি বলেছিলাম, ‘না। আমি এখানে থাকবো।’ আমি জানতাম এখানে থাকাটা পীড়াদায়ক হবে আমার জন্য কিন্তু আমি সুযোগের অপেক্ষায় ছিলাম।

প্রশ্ন : গ্রোথ হরমোনের ব্যাপারে…
মেসি : প্রথম দিকে বাবা এবং মা আমাকে ইনজেকশন দিয়ে দিত। যতদিন পর্যন্ত না আমি শিখেছি কিভাবে দিতে হয় ততদিন পর্যন্ত তারাই দিয়ে দিতেন। এটা দেখতে খুব সূক্ষ্ম ছিল অনেকটা পেন্সিলের মত। আমি প্রত্যেকদিনের ডোস প্রত্যেকদিন দেওয়া শুরু করলাম। প্রথম দিকে হালকা ব্যথা পেলেও পরবর্তীতে এটার সাথে অভ্যস্ত হয়ে যাই এবং ব্যথাও দূর হয়ে যায়।

প্রশ্ন : মাঠে বমি করেছিলেন…
মেসি : আমি জানি না কোন খাবার খাওয়ার কারণে আমি বমি করেছিলাম। কিন্তু বুঝতে পেরেছিলাম যে, আমার পাকস্থলিতে কোন সমস্যা হয়েছে। ছোটবেলা থেকেই ঠিকমত পুষ্টিকর খাবার না খাওয়ার কারণেই এটা হয়েছে। যখন আমার ২২-২৩ বছর বয়স তখন সবকিছুই খেতাম। চকলেট, আলফাজোর (ল্যাটিনদের ঐতিহ্যবাহী একটি খাবার) সহ অন্যান্য প্রায় সবকিছুই তখন খাওয়া শুরু করেছিলাম।

কিন্তু এখন আমি অনেক ভালো এবং পরিমাণমত খাবার খাই। সালাদ, মাংস, মাছ, গ্রিন টি এগুলোই বেশি খাওয়া হয় এখন। আমি সত্যি কথা বলতে এখনো সব খাই কিন্তু একটা নিয়মের ভেতর দিয়ে, যেটা আগে ছিল না। যদি আমাকে এক গ্লাস মদ দেওয়া হয়, তাহলে আমি সেখান থেকে শুধু এক চুমুকই খাই। একটা সময় আসে যখন আপনাকে সবকিছু নিয়মতান্ত্রিকভাবে করতে হয়। কিন্তু সেই সময়ের জন্যেও আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে এটার পরিপ্রেক্ষিতে আপনি কি পাচ্ছেন এবং আপনি কি দিচ্ছেন।

খাবারের অভ্যাস পরিবর্তন করার ফলে আমার ভেতর অভাবনীয় পরিবর্তন দেখতে পেরেছি, বিশেষ করে বমির ক্ষেত্রে। অনেক কিছুই হয়তো অনেকে বলতে পারে কিন্তু যে বমি কাণ্ড ঘটে গেছে সেটি থেকে কাটিয়ে উঠতে খাবারের নতুন অভ্যাসের সাথে মানিয়ে নিয়েছি এবং আশা করছি ঐ রকম ব্যাপার আর ঘটবে না।

প্রশ্ন : খেলোয়াড় হিসেবে উন্নতি করেছেন কিভাবে?
মেসি : আমি প্রথমেই চেষ্টা করেছি স্বার্থপর না হতে। বক্সের ভেতর আমি সবসময়েই সেরা অপশনকে খুঁজি। আমি দলকে এক জায়গা থেকে ঘুরিয়ে আরেক জায়গায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি। আমি এখনো প্রথম থেকে যেভাবে দৌঁড়ে আসছি, এখনো মাঠে সেভাবে দৌঁড়াই শুধু সেটার ভঙ্গিমাটা ভিন্ন।

মাঠে ভালো কিংবা খারাপ যেটাই খেলি না কেন, সেটা কখনোই গোলের জন্য নয়। সব থেকে বড় ব্যাপার হলো মাঠে আপনি কীভাবে অংশগ্রহণ করছেন, কিভাবে দ্রুততার সাথে আপনি বল নিবেন, বল দেওয়ার ক্ষেত্রে যোগ্য মানুষটি খুঁজে নেওয়া, বল না হারানো, এগুলো কখনোই গোলের উপর নির্ভর করে না।

গোল করলেন এর মানে এই নয় যে আপনি ভালো খেলেছেন। এমন অনেক ম্যাচ রয়েছে যেগুলোতে আমি গোল করেছি কিন্তু খেলেছি একদম জঘন্য। কিন্তু গোলই সবার নজর কাড়ে। ভালো খেলার মানে এই না যে আপনাকে গোল করতেই হবে। অভিজ্ঞতা যত বাড়বে, মাঠে আপনাকে নতুন নতুন জিনিসের সম্মুখীন হতে হবে। আগে আমি প্রায়ই বলের নিয়ন্ত্রণ নিতাম। এরপর নিজের মত করেই সেটাকে কাজে লাগাতাম কিংবা চিন্তা করতাম নিজের মত করে সেটাকে কিভাবে কি করা যায়। কিন্তু বর্তমানে দলের সবাইকে সাহায্য করার দিকেই মনোযোগ বেশি আমার। আমি চাই দলের সর্বোচ্চ সংখ্যক ফুটবলারই একটা গোলের পেছনে অবদান রাখুক।

প্রশ্ন : আর্জেন্টিনার এবার বিশ্বকাপ ভাবনা…
মেসি : আমাদের এই গ্রুপটার সম্ভবত এটাই শেষ বিশ্বকাপ। মানুষের চিন্তা-ভাবনা এবং ধ্যান ধারণাই আমাদেরকে এটা ভাবতে বাধ্য করেছে। অনেকের কাছেই টানা তিনটি বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলতে পারাটা মূল্যহীন। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সবাই আমরা ফলাফলের দিকেই নির্ভরশীল। মূলত এই কারণেই আমাদের এই গ্রুপটা মনে করছে, এটাই আমাদের শেষ বিশ্বকাপ। আমরা তিনটা ফাইনালে খেলেছি কিন্তু জিততে পারি নি। অনেক কথাই নিন্দুকেরা আমাদের নিয়ে বলেছে। আমরা বিশ্বাস করি, যদি এই বিশ্বকাপটা আমরা না জিততে পারি তাহলে আগের থেকেও অনেক বেশি তিরস্কার পেতে হবে। তখন আমাদের আর্জেন্টিনা দল থেকে বের হয়ে যাওয়া ছাড়া সম্ভবত কোন পথ থাকবে না। এটাই হচ্ছে আমাদের গ্রুপটার সর্বশেষ কথা।

আবার অন্যভাবে চিন্তা করতে গেলে তাদের সমালোচনাগুলোও ঠিক আছে। কিন্তু একই সময়ে তারা চাইবে আমরা যেন দলে আর না থাকি। এর আগেও এটা তারা করেছে। এরকমটা কিছুদিন আগেও আর্জেন্টিনার ক্রীড়া সাংবাদিকরা সবার মাঝে ছড়িয়ে দিয়েছিল এবং জনগণও সেটি ঢোকে গিলেছিল। তবে খুব কম সংখ্যক সাংবাদিকই এটা করেছিল। আমাদের দলের অনেক প্লেয়ারকে তারা মিথ্যা অপবাদে জর্জরিত করেছিল কিন্তু একই সময়ে আমরা অন্যটা ভেবেছিলাম। যদিও আমি আশা করছি এবার সবকিছুই ঠিক থাকবে এবং আর্জেন্টিনা দলের হয়ে বিশ্বকাপটা উপভোগ করতে পারবো।

প্রশ্ন : বিশ্বকাপ ফাইনালে খেলার আশা করেন?
মেসি : আমি মাঝে মাঝে মনে মনে কল্পনা করি, জুলাইর ১৫ তারিখে মস্কো স্টেডিয়ামের ফাইনালে খেলছি, ফাইনাল জিতেছি এবং ট্রফি উঁচিয়ে ধরেছি। এটাই আমার স্বপ্ন। প্রত্যেকবার যখন আমি বিশ্বকাপে আসি আগের থেকে শক্তিশালি হয়েই আসি। এজন্যেই আমি ২০১৪ সালে কেঁদেছিলাম। আমরা জানতাম, এটা কতটা কষ্টকর ছিল এতো কাছে গিয়েও এভাবে না পাওয়াটা। এটা সত্যিই হৃদয়বিদারক আমাদের জন্য।

প্রশ্ন : অপমানের সাথে কিভাবে মানিয়ে নেন?
মেসি : আমি মানুষের কটূক্তিকে প্রত্যাখ্যান করি। আমি জানি এগুলো খেলারই অংশ। আমি শুধু চেষ্টা করি এগুলো থেকে দূরে থাকতে। কিন্তু আমি বলতে পারি, এমনও সময় এসেছে এইসব সমালোচনা আমাকে ক্ষতিগ্রস্থ করেছে। কিন্তু আমি সেগুলোকে বছরের পর বছর চেষ্টা করে কাটিয়ে ওঠার মন্ত্র হৃদয়ে ধারণ করেছি।

আমি খুব হতাশ হয়েছিলাম যখন এক সাংবাদিক আমাকে বলেছিল, ‘সব কিছু আগের মত পুরোপুরি হচ্ছে না।’ ফুটবলের সাথে ‘কিছু’ জিনিস কখনোই মিলবে না। মাঠে কি ঘটেছে না ঘটেছে, আমরা ভালো খেলেছি নাকি খারাপ খেলেছি সেটা নিয়ে মানুষ মত প্রকাশ করতে পারে। কিন্তু তারা সোজা আপনার ব্যক্তিগত জীবনে ঢুকে যায় তখন আর সেই ‘কিছু’ জিনিসটা আর ঠিক থাকে না।

তারা লাভেজ্জির ব্যাপারে কিছু বলে না, কিন্তু একসঙ্গে তারা লাভেজ্জিকে আক্রমণ করেছিল। এটা খুবই দুঃখজনক। সেই ঘটনা এবং তারা কি চেয়েছিল সেগুলোর সত্য-মিথ্যা সবার সামনে তাদের বলা উচিত। আপনি মাঠে ভালো, খারাপ কিংবা যাচ্ছেতাই খেলেছেন, সেটা নিয়ে সমালোচনা করতে পারেন, কিন্তু ব্যক্তিগত আক্রমণ একদমই গ্রহণযোগ্য নয়।

প্রশ্ন : দুই হাত তুলে গোল উদযাপন করার কারণ?
মেসি : দাদী সেলিয়ার কথা সবসময় আমার স্মরণে থাকে। গোল উদযাপনটা তার প্রতি কৃতজ্ঞতাবোধ থেকেই তাকে উৎসর্গ করি। শুধু তাকেই নয়, ঈশ্বর আমাকে যা দিয়েছেন, এজন্য আমি তাকেও কৃতজ্ঞতা জানাই দু’হাত উঁচু করে। শুধু ফুটবল নয়, আমার জীবনে তিনি যা দিয়েছেন সবকিছুর জন্যে। কিন্তু ওই সময়ে আমি সবার আগে দাদীকে মনে করি।

প্রশ্ন : ছেলেদের ফুটবলার বানাবেন?
মেসি : আমি আশা করছি, তিনজনই ফুটবল খেলবে। কিন্তু আমি কাউকে জোর করবো না। আমি এখনই বলতে পারি থিয়াগো ফুটবল খেলতে খুব ভালোবাসে। অন্যান্য খেলোয়াড়দের সাথে মানিয়ে নিতে সে এখন বার্সেলোনা স্কুলেও যাচ্ছে। তারা কখনো আমাকে জিজ্ঞেস করে না কেন আমি গোল করার পর আকাশের দিকে দু হাত উঁচু করি। তারাও আমার মত করে এখন দু’হাত উঁচু করা শুরু করেছে। তারা এটা করছে কারণ আমাকে করতে দেখছে।

প্রশ্ন : ফাইনাল হারের পর কান্না…
মেসি : ফাইনাল হেরে আমি কয়েকবারই কেঁদেছি। কারণটা আগেও বলেছি। ট্রফি জয়টাই আমার উদ্দেশ্য ছিল এবং খুব কাছেও গিয়েছিলাম। আমি বিশ্বাস করি আমরা ট্রফি পাওয়ার উপযুক্ত।

সর্বশেষ আমি কেঁদেছি যখন মাতেও জন্ম নিয়েছিল। থিয়াগো যখন পৃথিবীতে আসে, তখন আমি সেখানে ছিলাম কিন্তু পরিস্থিতি ছিল জটিল। কখনো কোন কিছু পরিকল্পনা করে হয় না। মাতেওর জন্ম খুব স্বাভাবিকভাবেই হয়েছিল এবং তারপরেই আমরা এটা থেকে অভিজ্ঞতা নিয়েছি।

যখন আমি সিরোর সম্পর্কে বলছিলাম আনন্দে কেঁদেছিলাম কিন্তু অন্যান্যদের থেকে আমি এটার সাথে একটু বেশিই অভ্যস্ত।

প্রশ্ন : আর্জেন্টিনার সামাজিক প্রেক্ষাপট নিয়ে কিছু বলুন।
মেসি : আমি আর্জেন্টিনার সামাজিক প্রেক্ষাপট দেখে কষ্ট পাই। এমন নির্মম কষ্ট পাওয়াটা পুরো দেশ জুড়ে। এখানে নিরাপত্তার খুব অভাব। একদিন আমি রোজারিওতে ফিরে আসবো, আবারো উপভোগ করবো এই শহরটাকে যা আমি ছোটবেলায় বার্সেলোনাতে চলে আসার কারণে করতে পারি নি। আমি এসব করার কথা উড়িয়ে দিচ্ছি না। কিন্তু আর্জেন্টিনার নিরাপত্তা নিয়ে আমি খুবই চিন্তিত। ঘটনা হচ্ছে, তারা আপনাকে একটা ঘড়ি, একটা মোটরসাইকেল, একটা সাইকেলের জন্য মেরে ফেলতে দ্বিধা করবে না। সিঁধেল চোরে পুরো শহরটা ভরে গেছে। আপনি বাইরে গেলে ঘরে এসে দেখবেন, আপনার রুমের কিচ্ছু নেই। এমনকি আপনার কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে হেঁটেও তারা চুরি করতে পটু অথবা এর থেকেও অনেক খারাপ কিছু ঘটতে পারে যা আপনি কল্পনাও করেন নি।

আর্জেন্টিনার ভেতরে আরো অনেক সমস্যাই বিদ্যমান। কিন্তু সমস্যার ভেতরেও সমস্যার সমস্যা রয়েছে। আপনি এখানে শান্তি নিয়ে বসবাস করতে পারবেন না। আপনি বন্ধুদের সাথে কোথায় হাঁটতে যাবেন কিন্তু পারবেন না। যেমনটা আমি যদি কোথাও বন্ধুদের সাথে যাই সেখানে দাঁড়িয়ে কিংবা বসে আড্ডা দেওয়াটা বলতে গেলে অসম্ভব।

আমার এখনো মনে আছে যখন আমি ছোট ছিলাম, গ্রীষ্মের ছুটিতে আমি বাইরে যেতাম এবং রাত ৯টার আগে ঘরে ফিরতাম না। পুরো আর্জেন্টিনা জুড়েই তখন এমন শান্তিময় অবস্থা বিরাজ করেছিল। কিন্তু এখন এটা অসম্ভব এমনকি বাচ্চাদের জন্যেও।

এই সমস্যাগুলো উৎরে ওঠা কষ্টসাধ্য। কিন্তু আমাদেরকে পারতে হবে। আর্জেন্টাইনদের জন্য যখন খারাপ সময় আসে, তখন আমাদের এক হয়ে সেটি মোকাবেলা করতে হবে। আমি আশা করছি, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমরা জয়ী হবই।

প্রশ্ন : অবসরের পর কি করার ভাবনা?
মেসি : আমি এখনো ভেবে রাখিনি অবসরের পর কি করব। আমি আগেও বলেছি, এটা খুব চিন্তার বিষয়। একটা রুটিনের ভেতর দিয়ে আমি যাচ্ছি। খেলা, অনুশীলন, ভ্রমণ এসবের সাথে যখন বিচ্ছেদ ঘটবে তখন কি করবো, সেটা কল্পনা করতেই গা শিউড়ে ওঠে। সত্যি কথা বলতে আমি ওই সব মানুষদের মত না যে, সময় আসলেই আমি এটা করবো, ওটা করবো। আমি ওইসব জিনিস করতেই পছন্দ করি, যা আমি করতে পারি না আমার পেশার জন্য। আমার প্রাত্যহিক জীবনের রুটিন সেগুলো করতে দেয় না। আমি জানি না আমি বার্সেলোনাতেই থাকবো নাকি রোজারিওতে যাবো।

প্রশ্ন : আবেগকে কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করেন?
মেসি : আমার কোন সাইকোলজিস্ট নেই। আমি সবসময়েই আমার কাছের মানুষ যেমন স্ত্রী, মা-বাবা এদের সাথে কথা বলি। আপনি জানেন এই মানুষগুলোই আমার সব।

প্রশ্ন : জনসম্মুখে কথা বলার ক্ষেত্রে…
মেসি : আমি সবসময় সচেতন থাকি মানুষের সামনে কথা বলার ক্ষেত্রে। আমি যাই বলি না কেন সেটাকে বিভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করা যায়। এ জন্য আমি এসব থেকে দূরে থাকি। আমি কি বলছি সেটা নিয়ে চেষ্টা করি নিজেকে সংযত রাখতে, যাতে অন্যরা আমাকে দ্বিধান্বিত করার সুযোগ না পায়।

প্রশ্ন : খ্যাতি নিয়ে বসবাস করা কতটা কঠিন?
মেসি : আমি মানুষের চাটুবাক্য শুনে অভ্যস্ত। আমার প্রধান চাবিকাঠিই হলো নিজে যা আছি সেটাকে সঠিক পথে চালিয়ে নিয়ে যাওয়া। সব সময়ে স্বাভাবিক থাকা। আপনার নিজেরও কিছু আত্মসচেতনতাবোধ রয়েছে কারণ আপনার জানতে হবে আপনি কি বলতে চাচ্ছেন। কারণ মানুষ প্রতিনিয়ত আপনাকে অনুসরণ করছে।

প্রশ্ন : চাপ মানিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে…
মেসি : বিশ্বকাপ একদমই সন্নিকটে। বর্তমানে আমি সকল চাপকে আলাদা করে এক পাশে রেখে শুধু বিশ্বকাপ নিয়ে চিন্তা করছি। কিন্তু এরই মধ্যে আমি বার্সেলোনার হয়ে কয়েকটা প্রতিযোগিতায় লড়াই করে যাচ্ছি। জুনের আগে এটাই আমার প্রধান লক্ষ্য।

আমি পৃথিবীর সর্বত্রই দেখতে পাচ্ছি সবাই বলছে এটা আমার জন্য স্পেশাল বিশ্বকাপ। তারা আমাকে বিশ্বকাপ জিততে দেখতে চায়। পুরো বিশ্বের মানুষ আর্জেন্টিনাকে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন রূপে দেখতে চায়।

আমার সন্তান, আমার স্ত্রীই হচ্ছে আমার অস্তিত্ব। যখন আমার প্রথম সন্তান পৃথিবীতে আসে, আমার চিন্তাভাবনা এবং মানসিকতায় বিপুল পরিবর্তন আসে। শুধু ক্যারিয়ারের দিকে লক্ষ না রেখে ওদের দিকেও তখন লক্ষ্য রাখা শুরু করলাম। আমি এখনো হারতে কিংবা ড্র করতে পছন্দ করি না। কিন্তু এটাকে এখন ভিন্নভাবে গ্রহণ করি।

কিছু কিছু ব্যাপার আছে যা ফলাফলের থেকেও অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সবশেষে ফুটবল একটি খেলা। আমরা সবাই জিততে চাই এবং সবাই চ্যাম্পিয়ন হতে চাই। সবাই সেরা হতে চাই। এটা কখনোই সম্ভব হয় না, কারণ ফুটবল খেলাটা বিস্ময়ে ভরপুর। মাঝে মাঝে সেরারা জিততে পারে না।

আমি কেবলমাত্র সংখ্যায় একজন হলেও অনুভব করতে পারি ফুটবলের বাইরেও জীবনে আরো অনেক কিছু রয়েছে।

     More News Of This Category

ফেসবুকে আমরা

 

 

নামাজের সময়সূচী

  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ভোর ৫:০২
  • দুপুর ১১:৪৭
  • বিকাল ৩:৩৬
  • সন্ধ্যা ৫:১৫
  • রাত ৬:৩১
  • ভোর ৬:১৬