দৃক নিউজ২৪ ডেস্ক:- দেনে ওয়ালা জাবভি দেতা দেতা ছপ্পর ফাড়কে’। হেরা ফেরি ছবি গানের মতোই দম্পতির জীবন। ছিলেন নিঃসন্তান, হয়ে গেলেন এক্কেবারে ৫১ সন্তানের অভিভাবক। অবাক লাগলেও এমনটাই সত্যি। তবে এই পরিমাণ সন্তানের ‘জন্ম’ শারীরিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হয়নি। হয়েছে মানবিক ভাবে।
১৯৮১ সালে বীরেন্দ্র রাণার(৫৫) সঙ্গে বিয়ে হয়, মিনা রানার(৫০)। বিয়ের প্রায় এক দশক পর বীরেন্দ্র জানতে পারেন তিনি সন্তানের বাবা হতে পারবেন না। কারণ স্ত্রী মীনার গর্ভাশয়ে একটি টিউমার রয়েছে। তার ফলে তিনি সন্তানের জন্ম দিতে অক্ষম। এখান থেকেই শুরু ৫১ সন্তানের মা-বাপ হয়ে ওঠার কাহিনীর। ১৯৯০সালে শুক্রতালে গিয়ে ছোট একটা জমি কেনেন আর দত্তক নেন এক বছরের একটি পরিত্যক্ত ছেলেকে। ছেলের নাম রাখেন মঙ্গেরাম। তবে সেই সুখও তাঁদের বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। পাঁচ বছর বয়সে সেই ছেলের মৃত্যু হয়। তবে ভেঙে পড়েনি রাণা দম্পতি। এরপর তাঁরা আরও শিশু দত্তক নিতে শুরু করেন। শুক্রতালের ৮ বিঘা ওই জমির উপরেই গড়েন অনাথ আশ্রম। এরপর আর পিছনে তাকাতে হয়নি। শূন্য থেকে একে একে একান্নবর্তী হয়ে ওঠা।
মীনা জানালেন, ‘শিশুটি হিন্দু না মুসলিম আমরা সেদিকে নজর দিইনি। আমি শুধু এটাই মনে করতাম যে ওরা আমার সন্তান। ওই শিশুদের পড়াশোনা করানোর উপরই আমরা সবচেয়ে বেশি জোর দিই।”
ওই অনাথআশ্রমের পাশেই একটি স্কুলও চালান দম্পতি। বিভিন্ন লোকেদের থেকে দান সংগ্রহ করে বাচ্চাগুলিকে তাঁরা বড় করে তুলছেন। কয়েকজনের বিয়ে দিয়েছেন। কেউ আবার চাকরি পেয়ে এখন প্রতিষ্ঠিত। বর্তমানে তাঁদের ছাতার তলায় বেড়ে উঠছে ৪৬টি বাচ্চা। ১৯টি মেয়ে ও ২৭টি ছেলে। এদের মধ্যে অনেকে আবার বিশেষভাবে সক্ষম।
বীরেন্দ্র জানালেন, “শুক্রতাল গ্রাম পঞ্চায়েত আমাদের বিরাট একটা জমি দিয়েছে। অন্যান্য ক্ষেত্রে আমরা দানের উপর নির্ভর করে থাকি। প্রতিবেশীরা গম ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় খাবার-দাবার দান করেন।” রাণা দম্পতির উদ্যোগ ও নিষ্ঠার প্রশংসা করেছেন শুক্রতালের পঞ্চায়েত প্রধানও।