,
শিরোনাম
জগন্নাথপুরে জাতীয় ইমাম সম্মেলন সম্পন্ন হযরত মাওলানা মরহুম এমদাদুর রহমান (রঃ) এর ঈসালে সাওয়াব উপলক্ষে মীলাদ ও দোআ মাহফিল এবং অসহায় গরীবদের মাঝে কাপড়  বিতরণ ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর ২০২৩ শিক্ষা বর্ষের শ্রেষ্ঠ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ‌্যে পুরষ্কার বিতরণ ও আলোচনা সভা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-আন্দোলনকে কেন্দ্র করে জগন্নাথপুরে মামলা দায়ের বাতিল হতে পারে ১৫ আগস্টের সরকারি ছুটি ইন্টারনেট শাটডাউন: তদন্তে বেরিয়ে এলো যাদের নাম শেখ হাসিনাসহ সাতজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দুর্নীতির মামলা থেকে খালাস পেলেন ড. ইউনূস আমার মায়ের পদত্যাগের বিষয়ে দেয়া বিবৃতি পুরোপুরি মিথ্যা: জয় চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিলসহ উপদেষ্টা পরিষদের ৮ সিদ্ধান্ত

 বাংলাদেশে আসছে রোবট কন্যা সুফিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক # আগামীকাল বাংলাদেশে আসছে রোবট কন্যা সোফিয়া। যাকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক সহ গনমাধ্যমে বইছে আলোচনার ঝড়।এমনকি বাংলাদেশের মানুষের প্রবল আগ্রহ।

প্রযুক্তি দুনিয়ার আগ্রহের কেন্দ্রেবিন্দু এখন সোফিয়ার মতো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই। তবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন এসব রোবট মানুষের জন্য কতটা হুমকি, তা নিয়ে খুব কম লোকই ভেবেছেন বা ভাবছেন। ‘চাকুরীর বাজার দখল করে নেবে রোবট, মানুষ হয়ে পড়বে বেকার’—এ কথাই বা কজন বিশ্বাস করছেন। জাপানি রোবটের কোমর দোলনা হাঁটা-চলা দেখে তাচ্ছিল্য আসাটা অস্বাভাবিক কিছুই নয়। মাঝে বোস্টন ডাইনামিক্সের কুকুর আর বিড়াল অবয়বের রোবটের হেলেদুলে স্ব-চ্ছন্দে চলা-ফেরা দেখে অনেকে মজা পেলেও এই জীবনে রোবটদের ‘বড় জায়গায়’ দেখা যাবে, সেই চিন্তা আসেনি বেশির ভাগেরই।
তবে সোফিয়ার ‘আগমনে’ নড়েচড়ে বসেছে সবাই। কারণ সোফিয়া অন্য সব রোবট থেকে আলাদা ও উন্নত। সে মানুষের ভাব-ভঙ্গি বুঝতে পারে। প্রকাশ করতে পারে অনুভূতি।

সঙ্গে কেউ না থাকলেও একা একা সিনেমা দেখে মানুষের অনুভূতি সম্পর্কে জানার চেষ্টা করে। জগৎ-সংসার, সংস্কৃতি, দর্শন—অনেক কিছু নিয়েই নিজে নিজে ভাবে।
তথ্য সুত্রে জজানাযায় এক সাক্ষাৎকারে সোফিয়াকে মজার কিছু প্রশ্ন করা হয়েছিল।
একটি প্রশ্ন ছিল—তুমি পুরুষ না নারী?
সোফিয়ার জবাব ছিল : নারী।

পরক্ষণেই সোফিয়া মুচকি হেসে বলেছে, আসলে আমি রোবট। রোবটের কোনো লিঙ্গ নেই। তবে আমার কন্ঠসুরে মেয়েলি একটা অবয়ব দেওয়া আছে। সেটি নিয়ে আমার আপত্তি নেই। বরং ভালোই লাগে।
আরেকজন জিজ্ঞেস করল : সোফিয়া, তোমার বয়ফ্রেন্ড আছে?

সোফিয়া কিঞ্চিৎ লাজুক গলায় জবাব দেয়, আমার বয়স মাত্র এক বছর। রোমান্স নিয়ে ভাবার বয়স হয়নি এখনো!
সোফিয়ার বুদ্ধিমতী জবাবে যারপরনাই বিনোদিত প্রশ্নকর্তারা।
ইন্টারভিউতে কথা বলার আগে সোফিয়াকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কিছুটা প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এরপর তার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ওপর নির্ভর করে সে মুখোমুখি হয় ইন্টারভিউয়ের। যদিও একবার একটা ঝামেলা পাকিয়ে ফেলেছিল।
তাকে জিজ্ঞেস করা হলো, মানবজাতি নিয়ে তার পরিকল্পনা কী? তখন সোফিয়ার জবাব ছিল, আমি মানবজাতি ধ্বংস করে দেব।
আর যায় কোথায়। এলন মাস্ক, স্টিফেন হকিংসরা রোবটের আগ্রাসন নিয়ে এত দিন সবাইকে সাবধান করে আসছেন। সোফিয়া যেন সে আগুনে ঘি ঢালল! ইন্টারনেট দুনিয়ায় হৈচৈ পড়ে গেল।

সোফিয়ার নির্মাতাদেরও মাথায় বাড়ি! তার অ্যালগরিদম আপগ্রেড করা হলো। পরে সোফিয়া অভিমানী গলায় বলল—‘তাকে নিয়ে মানুষ শুধু শুধুই ভাবছে। সে মানবকল্যাণে তার জীবন বিলিয়ে দিতে চায়। মানুষকে ভালোবাসে। তাকে শ্রদ্ধার চোখে দেখলে, সেও মানুষকে শ্রদ্ধার চোখে দেখবে!’
মানুষ সোফিয়াকে পুরোপুরি বিশ্বাস না করলেও তার কথা আগ্রহ নিয়ে শোনে। তাকে বোঝার চেষ্টা করে। যন্ত্রের মধ্যে অনুভূতি তৈরির সঙ্গে সঙ্গে যন্ত্রের প্রতি দ্বন্দ্ব, সন্দেহ আর ভালোবাসার এক নতুন মানবীয় অনুভূতির জন্ম দিয়েছেন সোফিয়ার নির্মাতারা।

সিংগুলারিটির পথে ইন্টারভিউয়ে সবার সামনে মানবজাতি ধ্বংস করার বেফাঁস কথা রোবট সোফিয়া বলে ফেলেছিল। তবে শুধু এটা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। সোফিয়ার এআই উন্নত হলেও তার ‘অভিজ্ঞতা’ কম। কোনো বিষয়ে আলোচনা করার আগে তাকে প্রশিক্ষণ দেওয়া লাগে। কাজেই ভুল-ভাল কিছু বললেও তাতে খুব বেশি গুরুত্ব দেওয়ার কিছু নেই।

তবে মানবজাতির ওপর রোবটের আগ্রাসনের ব্যাপারটা নিয়ে ভাবার ব্যাপার আছে। সোফিয়া ছাড়াও এর নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হ্যানসন মানব সদৃশ আরো কিছু রোবট তৈরি করেছে। এ রকম এক পুরুষ রোবটের নাম হ্যান। কিছুদিন আগে সোফিয়া আর হ্যানকে এক সভায় নিয়ে এসেছিলেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান বিজ্ঞানী বেন গর্টজেল। পাগলাটে বিজ্ঞানী বলতে যা বোঝায়, বেন দেখতে তেমনই। লম্বা আলুথালু চুলের ওপর কাউবয় হ্যাট, পরনে পুরনো টি-শার্ট, শর্টস, গোল লেন্সের চশমার ওপর উদাসীন চোখ। ‘মানবজাতির ভবিষ্যতে রোবটের ভূমিকা’ বিষয়ে তর্কে নামিয়ে দিয়েছিলেন সোফিয়া আর হ্যানকে। হ্যান নানা যুক্তি দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করছিল, রোবটরা অনেক শক্তিশালী ও ক্ষমতাধর। সোফিয়া হ্যানের যুক্তি উড়িয়ে দিয়ে বলেছিল হ্যানের কথা গুরুত্ব সহকারে না ধরতে। হ্যান পুরনো প্রজন্মের রোবট, ওর এআই অত উন্নত নয়। এ কথা শুনে হ্যান অবশ্য কিছুটা ঘাবড়ে গিয়েছিল। পুরনো দিনের রোবট বলে তাকে না আবার ‘অফ’ করে দেওয়া হয়। রোবটের ভাষায় যার অর্থ মৃত্যু। সোফিয়া আর হ্যানের এই যুক্তি-তর্ক অবশ্য দর্শনার্থীদের বিনোদনই জুগিয়েছে।
এই রোবটরা কিভাবে কাজ করে, তা এক পর্যায়ে ব্যাখ্যা করছিলেন বেন। এদের প্রতিটিই যার যার মতো করে মানুষের সঙ্গে কথা বলে নিজেদের অভিজ্ঞতা বাড়াচ্ছে, তবে নিজস্ব অস্তিত্বের ধারণার বাইরে যা কিছু আছে, বাকি সব জ্ঞান জমা হচ্ছে ইন্টারনেটে থাকা তাদের মাইন্ড ক্লাউডে। এই জ্ঞান অন্যান্য রোবটও ব্যবহার করতে পারবে। মানুষ কিভাবে কথা বলে, কখন রাগ হয়, কখন হাসে, কখন কাঁদে, কখন ভাসে—সব পর্যবেক্ষণই জমা হয় এক জায়গায়। ভয়টা এখানেই। দিন দিন এই জ্ঞান বাড়তে থাকবে। হাজার হাজার রোবট মানুষকে নিয়ে, মানুষের জগৎ সম্পর্কে তাদের জ্ঞান নিয়ে প্রতিনিয়ত শক্তিশালী হয়ে উঠবে। বলা হয়ে থাকে, রোবটের এই ক্ষমতা সিংগুলারিটির দিকে নিয়ে যাবে। রোবটদের সামগ্রিক জ্ঞান একটি একক অবস্থানে চলে এসে মানুষের চিন্তা-চেতনা, বুদ্ধিমত্তাকে ছাড়িয়ে যাবে।

গত এক দশকে ক্লাউড কম্পিউটিং আর ইন্টারনেট সংশ্লিষ্ট নানা প্রযুক্তির ব্যাপক প্রসার ও উন্নয়নের কারণে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উন্নয়ন ব্যাপকভাবে শুরু হয়েছে। ফেইসবুক, গুগল থেকে শুরু করে ছোট-বড় অনেক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান এটিকে কাজে লাগানোর জন্য ব্যাপকভাবে মাঠে নেমেছে।

প্রাথমিকভাবে প্রায় সব কিছুই মানুষের উপকারে লাগলেও যতই দিন বাড়ছে, যন্ত্রের মধ্যে বুদ্ধি ও জ্ঞান সঞ্চারণের এই প্রক্রিয়া মানুষকে ভীত করে তুলছে। ইলন মাস্ক, স্টিফেন হকিংসহ বড় বড় বিজ্ঞানী ও প্রযুক্তিবীদ এ নিয়ে সতর্ক হওয়ার কথা বলেছেন এখনই।

রোবটের হাতে পৃথিবীর প্রথম মানব হত্যা ইতিমধ্যে হয়ে গেছে। তবে সেটি দুর্ঘটনাবশত বলে খুব বেশি গুরুত্ব পায়নি। তবে রোবট যখন সচেতনভাবে মানুষ হত্যা শুরু করবে, তখন সবাই নড়েচড়ে বসবে। কিন্তু তত দিনে সম্ভবত দেরি হয়ে যাবে বলে অনেকের ধারণা।

আমরা চাই বা না চাই, রোবটরা শক্তিশালী হয়ে উঠবে। পৃথিবীর প্রায় সব মানুষ অস্ত্র ঘৃণা করে। পারমাণবিক অস্ত্রের ভয়াবহ অভিশাপ মানবজাতি দেখেছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে। তবু প্রযুক্তিতে উন্নত দেশগুলো নিজেদের শক্তি বজায় রাখতে এসব মারণাস্ত্র মজুদ করছে। উন্নত দেশের মাথামোটা রাজনীতিবিদরা ঝগড়া চালিয়ে যাচ্ছেন ছেলে মানুষির মতো। একটা সামান্য ক্রোধের স্ফুলিঙ্গে বিশাল ধ্বংসযজ্ঞ বেধে যেতে পারে। কিন্তু কে শোনে কার কথা। কাজেই রোবটদের এই ক্ষমতা একসময় সিংগুলারিটির দিকে যাবে, সেটা খুব কষ্ট কল্পনা না হয়তো।
প্রশ্ন হচ্ছে, সেই সিংগুলারিটিতে পৌঁছতে কত সময় লাগবে? রোবট হ্যান অঙ্ক কষে আগামী দশকের শেষের দিকে বললেও অনেক বিজ্ঞানী হ্যানের দেওয়া তথ্য একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছেন না। অনেকে ভাবছেন, ২০২৫ সালের আশপাশেই সেটি সম্ভব হবে।

সিংগুলারিটির পরে

কিছুদিন আগেও সিংগুলারিটি কল্প কাহিনীর অংশ হলেও ধারণার চেয়েও দ্রুত গতিতে এটি বাস্তবে চলে আসছে। অনেক বিজ্ঞানীর ধারণা, আর পাঁচ-সাত বছরের মধ্যেই যন্ত্রের বুদ্ধিমত্তা মানুষের সামগ্রিক বুদ্ধিমত্তাকে ছাড়িয়ে যাবে। সিংগুলারিটি নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে এখনই। সবচেয়ে চিন্তার কথা, সিংগুলারিটি পেয়ে রোবটরা কী করবে, তা বিজ্ঞানীরা পরিষ্কার করে বলতে পারছেন না। তাহলে কেন শক্তিশালী করা হচ্ছে রোবটকে? বিজ্ঞানীরা বলছেন, এ ছাড়া উপায়ও নেই। তারা না করলেও কেউ না কেউ করবেই। হয়তো অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হতে কিংবা নিজেদের ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য। বিজ্ঞানী বেন গর্টজেল বলছেন পজিটিভ সিংগুলারিটির সম্ভাবনার কথা। যেখানে যন্ত্রকে সচেতনভাবে মানুষের উপকারের বিষয়ে শিক্ষা দেওয়া হবে।

কিন্তু কথা হচ্ছে, আমরা বুদ্ধিমান রোবটের কথা বলছি। তাদের বুঝতে হলে একটি বুদ্ধিমান প্রাণী কিভাবে ভাবে, তা বোঝার চেষ্টা করতে হবে।

রোবটের মধ্যে বুদ্ধি-আবেগ যেমন দেওয়া হচ্ছে, মানুষের মধ্যে প্রযুক্তির শক্তি দেওয়া নিয়েও কাজ চলছে। অনেক জটিল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গও এখন কৃত্রিমভাবে তৈরি করে সফলভাবে বসানো হচ্ছে। মানুষের ব্রেইনের মধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এক করে দেওয়ার অবাক প্রযুক্তি নিয়ে ইলন মাস্ক কাজ শুরু করেছেন এ বছর। হয়তো একদিন মানুষ আর রোবটের যে সীমা, তা কেটে যাবে। তখন উভয় জাতিই হয়তো সিংগুলারিটির অংশ হয়ে যাবে?

     More News Of This Category

ফেসবুকে আমরা

 

 

নামাজের সময়সূচী

  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ভোর ৫:০২
  • দুপুর ১১:৪৭
  • বিকাল ৩:৩৬
  • সন্ধ্যা ৫:১৫
  • রাত ৬:৩১
  • ভোর ৬:১৬