দৃক নিউজ২৪ ডেস্ক:- আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদকে নিউরোলজি ডাক্তার দেখানো উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।
রবিার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের তৃতীয় তলার হলরুমে বিএনপির সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে জিয়া পরিষদ কর্তৃক ‘গণতন্ত্র ও উন্নয়নে তারেক রহমান’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা উপরোক্ত মন্তব্য করেন।
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘তোফায়েল সাহেবকে আমি ভালোভাবে চিনি। সেই যে ৬৬’র পর থেকে ছয় দফা আন্দোলন, ১১ দফা আন্দোলন থেকেই চিনি। ভদ্রলোককে আমি ভালোই জানতাম, কিন্তু তিনি সেদিন হঠাৎ করে বললেন তিনি নাকি জিয়াউর রহমানকে চেনেন না। তখন মনে হলো এ তোফায়েল সাহেবকে তো আমি চিনি না।
তোফায়েল সাহেব কি হলফ করে বলতে পারবেন যে তিনি জিয়াউর রহমানকে চেনেন না? পারবেন না। কাউকে খুশি করার জন্য এ কথাটা বলেছেন। তিনি ইতিহাসকে বিকৃত করলেন। উনার মতো একজন দায়িত্বশীল লোকের কাছ থেকে এটা আশা করা যায় না। উনাকে নিউরোলজি ডাক্তার দীন মোহাম্মাদ সাহেবকে দেখানো উচিত।’
ডাক্তার দেখানোর প্রসঙ্গে বিএনপির এ শীর্ষ নেতা বলেন, ‘এমন হতে পারে বার্ধক্যজনিত কারণে তার (তোফায়েল) সামান্য স্মৃতিভ্রম হয়েছে। জিয়াউর রহমানকে আওয়ামী লীগের চেনার দরকার নাই।
কারণ তাকে চিনলে অনেক কিছু মেনে নিতে হবে। আওয়ামী লীগ সবসময় মিথ্যা কথা বলে। আমাদের দেশে এত ভালো ভালো দল আছে তার মধ্যে একটা মিথ্যাবাদী দল থাকারও দরকার।’
তিন আরো বলেন, ‘জিয়াউর রহমান সাহেব তো আজকের আওয়ামী লীগের জন্মদাতা। কারণ তিনি বাকশালের গর্ভ থেকেই এ আওয়ামীলীগকে বের করেছিলেন। বাকশাল, একদলীয় শাসন ব্যাবস্থা ছিল তখন আওয়ামী লীগ ছিল না।
উনি বাকশাল উঠিয়ে দিলেন এবং এ আওয়ামী লীগের লাইসেন্সও তিনিই দিলেন। অথচ সেই তোফায়েল সাহেব জিয়াউর রহমানকে চেনেন না! ভুল বলে ফেলছেন ভাই, উনার পক্ষ থেকে আমি ক্ষমা চাচ্ছি।’
দেশে যে দুর্নীতি হচ্ছে তার অর্ধেকই করছে রাজনীতিবিদরা’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির সাবেক এ মন্ত্রী বলেন, ‘এটাই যদি হয় দয়া করে আপনারা দুর্নীতি বন্ধ করে দেন, তাহলে দেশে দুর্নীতি পুরোটাই বন্ধ হয়ে যাবে। আজকে আওয়ামী লীগের দুর্নীতির কারণে দেশ ডুবতে চলেছে।
তিনি আরও বলেন, দেশের জনগণ তাদের প্রয়োজনেই তারেক রহমানকে দেশে ডেকে নিয়ে আসবে। এ সরকারের অধীনে এবং বিএনপিকে বাদ দিয়ে দেশে আর কোনো নির্বাচন হবে না বলেও এ সময় তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
একই আলোচনা সভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান ও কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘আমরা যত স্লোগানই দেই না কেন একটা সত্য আমাদের মানতেই হবে, সেটি হচ্ছে এ ফ্যাসিবাদী সরকারের অপসারণ ছাড়া একটি ভালো নির্বাচন সম্ভব নয়।আমাদের প্রাণের নেতা ভালোবাসার প্রতীক বাংলাদেশের জনগণ যার জন্য অপেক্ষা করছেন সেই তারেক রহমানকেও আমরা ফেরত আনতে পারব না। এ ফ্যাসিবাদী সরকারকে আমাদের পরাজিত করতেই হবে।
সেটি দুইভাবে সম্ভব, একটি গণঅভ্যুত্থান ও আরেকটি হচ্ছে নির্বাচন। তবে এটা আমাদের মনে রাখতে হবে যেনতেন নির্বাচনে আমরা যেন অংশগ্রহণ না করি।
এতে আমাদের দল হয়ত থাকবে, কিন্তু আমাদের ক্ষমতা ঐতিহ্য কিছু থাকবে না। তাহলে কি আমরা নির্বাচনে যাবো না? হ্যা যাব তবে নির্বাচনে যাওয়ার জন্য যে সরকার দরকার সেটা তৈরি করে নির্বাচনে যাব।
আয়োজক সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কবির মুরাদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা প্রফেসর ডা. আব্দুল কুদ্দুস, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ।