,
শিরোনাম
জগন্নাথপুরে জাতীয় ইমাম সম্মেলন সম্পন্ন হযরত মাওলানা মরহুম এমদাদুর রহমান (রঃ) এর ঈসালে সাওয়াব উপলক্ষে মীলাদ ও দোআ মাহফিল এবং অসহায় গরীবদের মাঝে কাপড়  বিতরণ ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর ২০২৩ শিক্ষা বর্ষের শ্রেষ্ঠ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ‌্যে পুরষ্কার বিতরণ ও আলোচনা সভা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-আন্দোলনকে কেন্দ্র করে জগন্নাথপুরে মামলা দায়ের বাতিল হতে পারে ১৫ আগস্টের সরকারি ছুটি ইন্টারনেট শাটডাউন: তদন্তে বেরিয়ে এলো যাদের নাম শেখ হাসিনাসহ সাতজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দুর্নীতির মামলা থেকে খালাস পেলেন ড. ইউনূস আমার মায়ের পদত্যাগের বিষয়ে দেয়া বিবৃতি পুরোপুরি মিথ্যা: জয় চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিলসহ উপদেষ্টা পরিষদের ৮ সিদ্ধান্ত

আজ পবিত্র আশুরা, ইসলামের ইতিহাসে শোকাবহ একটি দিন

দৃক নিউজ২৪ ডেস্ক:-  আজ ১০ মহরম, রবিবার, পবিত্র আশুরা। ইসলামের ইতিহাসের শোকাবহ একটি দিন। কারবালার প্রান্তরে ঐতিহাসিক বিয়োগান্তক ঘটনার স্মরণে মুসলিম বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও আজ যথাযোগ্য মর্যাদায় পবিত্র আশুরা পালিত হবে।
এদিকে পবিত্র আশুরা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

দিনটি উপলক্ষে বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় সংগঠনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। আপাত দৃষ্টিতে কারবালার প্রান্তরে বিয়োগান্তক ঘটনার স্মরণে দিনটি পালন করা হলেও ইসলামের ইতিহাসে এ দিনটির গুরুত্ব ও তাৎপর্য ঐতিহাসিক। কারণ বহু ঐতিহাসিক ঘটনা এই তারিখে সংঘটিত হয়েছিল। তাই বিশ্বের মুসলিম উম্মাহ যথাযথ মর্যাদায় দিনটিকে স্মরণ করে থাকে। ইসলামি চিন্তাবিদদের মতে, আশুরা হলো ইসলামের একটি ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ দিবস। এটি প্রতি হিজরী সনের মহরম মাসের দশ তারিখে পালিত হয়।

আরবীতে ‘আশারা’ মানে ১০। আর সে কারণে দিনটিকে আশুরা বলে অভিহিত করা হয়।
মহরমের ৯ তারিখের দিবাগত রাত থেকে আশুরা পালন শুরু হয়। শিয়া সম্প্রদায়ের কাছে এ দিনটি বিশেষ মর্যাদাময়। কেননা এই দিনে মুহাম্মদ (স)-এর দৌহিত্র ইমাম হোসাইন (রা) ইসলামের তৎকালীন শাসনকর্তা এজিদের সৈন্য বাহিনীর হাতে কারবালার প্রান্তরে শহীদ হয়েছিলেন। তাদের মতে, জনপ্রিয় ধারণায় আশুরা মূলত একটি শোকাবহ দিন। কেননা এদিন মুহাম্মদ (সা)-এর দৌহিত্র হোসাইন (রা) নির্মমভাবে শহীদ হয়েছিলেন। ইসলামের ইতিহাস অনুসারে এই দিনটি বিভিন্ন কারণে গুরুত্বপূর্ণ। এই দিনটি একটি পবিত্র দিন কেননা ১০ মহরম তারিখে আসমান ও জমিন সৃষ্টি করা হয়েছিল। এই দিনে পৃথিবীর প্রথম মানুষ হযরত আদম (আ) কে সৃষ্টি করা হয়েছিল। এই দিনে আল্লাহ নবীদের স্ব স্ব শত্রুর হাত থেকে আশ্রয় প্রদান করেছেন। এই দিন নবী মুসা (আ)-এর শত্রু ফেরাউনকে নীলনদে ডুবিয়ে দেয়া হয়। এই দিনে নূহ (আ)-এর কিস্তি ঝড়ের কবল হতে রক্ষা পেয়েছিল। তিনি জুডি পর্বতশৃঙ্গে নোঙ্গর ফেলেছিলেন। এই দিনে দাউদ (আ)-এর তাওবা কবুল হয়েছিল। নমরূদের অগ্নিকু- থেকে ইব্রাহীম (আ) উদ্ধার পেয়েছিলেন। আইয়ুব (আ) দুরারোগ্য ব্যাধি থেকে মুক্ত ও সুস্থতা লাভ করেছিলেন।

এদিনেই আল্লাহতা’আলা ঈসা (আ) কে উর্ধাকাশে উঠিয়ে নিয়েছেন। হাদিসে বর্ণিত আছে যে এই তারিখেই কেয়ামত সংঘটিত হবে। তবে ইসলামি বিশেষজ্ঞদের মতে, মুসলিম উম্মাহর কাছে মহরম মাসের গুরুত্ব শতগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে হিজরী ৬১ সালের বর্তমান ইরাকের কুফার নিকটবর্তী কারবালা প্রান্তরে নবীজির প্রাণপ্রিয় দৌহিত্র হজরত ইমাম হোসাইন ও তার সঙ্গীসাথীর নির্মম শাহাদাৎবরণের পর। নবীজির ওফাত গ্রহণ ও খোলাফায়ে রাশেদীনের যুগ শেষ হওয়ার পর মুসলিম সমাজ বিভ্রান্ত ও বিপথগামী হয়ে পড়ে। ইসলামের সাম্য, ভ্রাতৃত্ব, স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক সরকার ও রাষ্ট্র ব্যবস্থা উচ্ছেদ করে এজিদের বংশীয় রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। এজিদ বিন মুয়াবিয়া ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে নেয়। গৃহযুদ্ধ বাঁধিয়ে ন্যায়-ইনসাফপূর্ণ শান্তি ও সমৃদ্ধির ইসলামি সমাজকে পুনরায় জাহিলিয়াতের লুটপাট, বর্বরতা, সন্ত্রাস-যুদ্ধ ও দুর্নীতি-অনাচারের দিকে নিয়ে যায়। সে এমনই পথভ্রষ্ট ছিল যে মদ্যপানকে বৈধ ঘোষণা করেছিল। একই সঙ্গে দুই সহোদরাকে বিয়ে করাকেও বৈধ ঘোষণা করেছিল। শাসক হিসাবে সে ছিল স্বৈরাচারী ও অত্যাচারী। এমতাবস্থায় ইমাম হোসাইন (রা) এজিদের আনুগত্য করতে অস্বীকৃত হন এবং ইসলামের সংস্কারের লক্ষ্যে মদীনা ছেড়ে মক্কা চলে আসেন। সত্য ও ন্যায়বিচারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। অবশেষে ৬১ হিজরী সালের দশই মহরম তথা আশুরার দিনে কারবালা প্রান্তরে নিজের পরিবার-পরিজন, সন্তান এবং সঙ্গী-সাথীদের নিয়ে এক অসম যুদ্ধে এজিদের সৈন্যের হাতে শাহাদাৎবরণ করেন। সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য হযরত ইমাম হোসাইন (রা) এবং তার পরিবার ও অনুসারীরা যুদ্ধ করতে গিয়ে ফোরাত নদীর তীরে এজিদ বাহিনীর হাতে আত্মত্যাগ শান্তি ও সম্প্রীতির ধর্ম ইসলামের সুমহান আদর্শ সমুন্নত রাখতে মানবতার ইতিহাসে সমুজ্জ্বল হয়ে আছেন। তাই কারবালার এই শোকাবহ ঘটনা ও পবিত্র আশুরার শাশ্বত বাণী অন্যায় ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে আজও অনুপ্রেরণা জোগায়। প্রেরণা জোগায় সত্য ও সুন্দরের পথে চলার।

তাই আজ আশুরার এ পবিত্র দিনে কারবালার শহীদদের স্মরণ করতেই আয়োজন করা হয় নানা কর্মসূচীর। এদিকে পবিত্র আশুরা উপলক্ষে রাজধানী ঢাকাসহ দেশব্যাপী বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। পুরান ঢাকার হোসেনি দালান থেকে শিয়া সম্প্রদায়ের উদ্যোগে প্রতিবারের ন্যায় এবার তাজিয়া মিছিল বের হবে। এ ছাড়া রাজধানীর মিরপুর, মোহাম্মদপুর, পুরানা পল্টনসহ বিভিন্ন স্থান থেকে তাজিয়া মিছিল বের হবে। এ উপলক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে এক আলোচনা সভার আয়োজন করে। মুসলিম সম্প্রদায়ের মতো অন্যান্য ধর্মীয় সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে ১০ মহরম বিভিন্নভাবে পালন করা হয়ে থাকে। বিশেষ করে ইহুদি সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে এ দিনে আশুরা উপলক্ষে রোজা রাখার প্রচলন রয়েছে। শিয়া সম্প্রদায় মার্সিয়া ও মাতমের মাধ্যমে এই দিনটি উদযাপন করে।

আশুরা উপলক্ষে ৯ এবং ১০ মহরম তারিখে অথবা ১০ এবং ১১ মহরম তারিখে রোজা রাখা মুলমানদের জন্য সুন্নত বিধান করা হয়েছে। এ ছাড়া মুসলমানরা এদিন উত্তম আহারের জন্য চেষ্টা করে থাকে। এদিকে আশুরা উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন সংবাদপত্রে বিশেষ নিবন্ধ প্রকাশ করা হয়েছে। এ ছাড়া সরকারী-বেসরকারী রেডিও টেলিভিশনে বিশেষ অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে। আশুরা উপলক্ষে গতকাল শনিবার পত্রিকা অফিস বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

এদিকে পবিত্র আশুরা উপলক্ষে গতকাল শনিবার রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ তাঁর বাণীতে আশুরার মহান শিক্ষা সকলের জীবনে প্রতিফলন ঘটানোর আহবান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, কারবালার শোকাবহ ঘটনার স্মৃতিতে ভাস্বর আশুরার শাশ্বত বাণী আমাদেরকে অন্যায় ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে উদ্বুদ্ধ করে এবং সত্য ও সুন্দরের পথে চলার প্রেরণা যোগায়। পবিত্র আশুরা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি কারবালা প্রান্তরে শাহাদতবরণকারী সকল শহীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন আবদুল হামিদ বলেন, ইসলামের সুমহান আদর্শকে সমুন্নত রাখার জন্য তাঁদের এই আত্মত্যাগ ইতিহাসে সমুজ্জ¦ল হয়ে আছে। রাষ্ট্রপতি বলেন, ইসলাম শান্তি ও সম্প্রীতির ধর্ম। এখানে হানাহানি, হিংসা, দ্বেষ বা বিভেদের কোন স্থান নেই। রাষ্ট্রপতি পবিত্র আশুরার এই দিনে সাম্য, ন্যায়ভিত্তিক ও শান্তিপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি মুসলিম উম্মাহর ঐক্য, সংহতি ও অব্যাহত অগ্রগতি কামনা করেন।

এদিকে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশুরার মহান শিক্ষা নিয়ে সকল অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য দেশবাসীর প্রতি আহবান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আমাদের জাতীয় জীবনে সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে আশুরার মহান শিক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে আমি সকলের প্রতি আহবান জানাচ্ছি। গতকাল শনিবার পবিত্র আশুরা উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে তিনি এ আহবান জানান। শেখ হাসিনা বলেন, পবিত্র আশুরা মানব ইতিহাসে একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিন। এ দিনটি বিশ্বের মুসলমানদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র। হিজরি ৬১ সালের ১০ মহররম মহানবী হযরত মুহম্মদ (স.) এর প্রিয় দৌহিত্র হযরত ইমাম হোসেন (রা.) ও তাঁর পরিবারবর্গ কারবালা প্রান্তরে শাহাদতবরণ করেন। সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠায় তাঁদের এ আত্মত্যাগ মুসলিম উম্মাহর জন্য এক উজ্জ্বল ও অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে আছে বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।

     More News Of This Category

ফেসবুকে আমরা

 

 

নামাজের সময়সূচী

  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ভোর ৫:১০
  • দুপুর ১১:৫১
  • বিকাল ৩:৩৫
  • সন্ধ্যা ৫:১৪
  • রাত ৬:৩২
  • ভোর ৬:২৪