দৃক নিউজ২৪ ডেস্ক:- শরতের উদাস বনে ঘোমটা পড়েছে দুদিন আগে। আর শীতের চাদর ভোরের দিকে ভাঁজ খোলে। যেটুকু কুয়াশা, তাও সকালের আলো ফুটতেই কেটে যায়। সকাল সকাল স্নান সেরেই আনন্দমেলায় যাত্রা। পোশাকে রঙয়ের বাহার। মনে আনন্দঝলক।
মা এসেছেন আরও দুদিন আগে। আজ অষ্টমী। ষষ্ঠী এবং সপ্তমীতেও প্রকৃতির রূপ একই ছিল। আকাশ সাদা মেঘের দখলে। ছেঁড়া ছেঁড়া সাদা মেঘের ভেলায় আকাশের রূপ যেন উপচে পড়ছে। নগরজীবনে কাশফুলের দেখা নেই। তবুও শরতের রূপ অনুভবের কাশফুলে সেজেছে নাগরিক মন। সে মনে ভর করে শারদোৎসবে মেতেছে প্রকৃতিও।
এমন আবেগের ডালা মেলে ধরেই সাজানো হয়েছে পূজা মণ্ডপগুলো। আলোর কত রূপ! তারই দেখা মিলছে মণ্ডপে মণ্ডপে। গেট সাজানো হয়েছে খানিক দূর থেকেই। মণ্ডপের কাছে আরও গেট। আর তা থেকেই আলোকছটা ছিটকে পড়ছে। আলোর এমন ঝলকানিতে মা দুর্গার রূপে আলোকিত হচ্ছে ভক্তরা।
এদিন ঢাকেশ্বরী মণ্ডপের ভেতর থেকে ক্ষণে ক্ষণে ঢাকে কাঠি পড়ছিল। আর সে কাঠির কুড় কুড় শব্দেই মন আন্দোলিত করছে । ঘণ্টা- কাসার টিং টিং আওয়াজ, মঙ্গল শাঁখ আর ত্রয়ো স্ত্রীর উলু ধ্বনিতে আকুল হয়ে উঠল মন। মা বন্দনায় এত আনন্দ!
রুশনী আমীন নামের এক মুসলিম তরুণী এসেছেন বান্দবী শ্রী নন্দিতা দাসের সঙ্গে। বাড়ি পুরান ঢাকার শাঁখারী বাজারে। নন্দিতার সঙ্গে তাল মিলিয়েই সেজেছেন রুশনী। হাতে শাঁকা। লাল আর সাদা ব্লাউজ পরনে।
বলেন, ধর্ম নিজের। কিন্তু উৎসব তো সবারই। শরত সবে গেল। হৃদয়ে দাগ তো রয়েই গেছে। তাই শরতের সাজেই সেজেছি। আমার সনাতনী ধর্মের বান্দবীর সঙ্গে এসেছি। আমাদের ঈদ আনন্দেও সে নিয়মিত অংশ নেয়। আনন্দ ভাগাভাগির মধ্যেই সম্প্রীতি। সারাদিন থাকব। সন্ধ্যায় ধূপের গন্ধ নেব।
আর নন্দিতা তো আনন্দে মাতোয়ারা। মা দুর্গার সাজেই সেজেছেন ঠিক। বলেন, দুর্গোৎসব হচ্ছে আমাদের প্রাণের উৎসব। এই আনন্দের মধ্য দিয়েই পবিত্র হওয়ার সুযোগ আসে। মায়ের সেবায় আজ আমরা নিবেদিত। মায়ের মন জয় করতে পারাই হচ্ছে এ আনন্দমেলার সারকথা।