দৃক নিউজ২৪ ডটকম ডেস্ক#
ব্রিটেনে প্রথম এবং একমাত্র বাংলাদেশি হিসেবে হাইকোর্টের বিচারক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন সিলেটি বংশোদ্ভূত আখলাক চৌধুরী। রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ তাকে এ পদে নিয়োগ দিয়েছেন বলে জানগেছে। তাঁর নিয়োগ কার্যকর হবে ২রা অক্টোবর থেকে।
জানাযায়, শুক্রবার বিচার বিভাগ থেকে এ ঘোষণা দেয়া হয়েছে। ওই ঘোষণায় বলা হয়েছে আখলাকুর রহমান চৌধুরীর বয়স এখন ৫০ বছর। তিনি ‘দ্য অনারেবল মিস্টার জাস্টিস চৌধুরী’ নামে পরিচিত হবেন। তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে রানীর বেঞ্চ ডিভিশনে।এর আগে ২০১৪ সালে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত স্বপ্নারা খাতুনকে সার্কিট জাজ হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। তার দায়িত্ব ছিল ক্রাউন অ্যান্ড ফ্যামিলি কোর্টের মামলার শুনানি করা। এদিকে বিচারক আখলাক চৌধুরী ১৯৯২ সালে যোগ দেন বারে। কুইন্স কাউন্সেল হিসেবে এ পর্যন্ত দু’জন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূতকে দায়িত্ব দেয়া হলো। তার মধ্যে বিচারক চৌধুরী অন্যতম। তাঁর আগে কুইন্স কাউন্সেলে নিয়োগ দিয়ে হয়েছিল আরেক বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত আজমালুল হোসেনকে। বিচারক আখলাকুর রহমান চৌধুরীকে ২০০৯ সালে রেকর্ডার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। ২০১৬ সালে তাকে হাইকোর্টের ডেপুটি জাজ হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। দ্রুত তিনি কাজে দক্ষতা দেখান এবং তারই ধারাবাহিকতায় সরকারের নজরে পড়েন। এর ফলে দ্রুত পদোন্নতি পেতে থাকেন। দীর্ঘদিন তিনি এটর্নি জেনারেলের অ্যাপ্রুভড কাউন্সিলে এ-প্যানেলের সদস্য ছিলেন। সেখানে তিনি পররাষ্ট্র ও কমনওয়েল অফিস, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থাকে মানবাধিকার থেকে বিভিন্ন ইস্যুতে পরামর্শ দিয়েছেন। ব্যারিস্টার আখলাক চৌধুরী কিউসি’র পৈত্রিক বাড়ি সিলেটের জকিগঞ্জে। ১৯৬৭ সালে তার বাবা আজিজুর রহমান চৌধুরী যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান। যুক্তরাজ্যেই জন্ম হয় আখলাক চৌধুরীর। তৎকালে আজিজুর রহমান ছিলেন স্কটল্যান্ডের এভারডিনের অন্যতম প্রধান রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী। মুক্তিযুদ্ধের সময় আজিজুর রহমান সংগঠক হিসেবে বাংলাদেশের পক্ষে কাজ করেন।আখলাক চৌধুরী ব্রিটেনের বিখ্যাত কিংস বেঞ্চ ওয়াক-এ প্র্যাকটিস করেন। এ বেঞ্চেই সে দেশের বিখ্যাত সব আইনজীবীরা প্র্যাকটিস করে থাকেন। ২০০৯ সালে তিনি ব্রিটেনের এসই সার্কিটে খন্ডকালীন বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৩ সালে তিনি সে দেশের ট্রেজারি কাউন্সিল’র অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ পান। গতবছর তিনি ব্রিটেনের আইন পেশার সম্মানজনক ‘কিউসি’ নির্বাচিত হন। কিউসি হওয়ার জন্য অনেক ধাপ পেরোতে হয়। আবেদন করার পর পরীক্ষায় বসতে হয়, এরপর প্রেজেনটেশন, ইন্টারভিউ পেরিয়ে কিউসি হিসেবে যোগ্যতা অর্জন করতে হয়। এছাড়া বেশ কয়েকজন বিচারকের রেফারেন্সও এ ক্ষেত্রে প্রয়োজন হয়। ব্যক্তিগত জীবনে দুই ছেলে ও এক মেয়ের জনক আখলাক চৌধুরী। তার ভাই জিয়াউর রহমান কেয়ার ইন্টারন্যাশনাল নামক আন্তর্জাতিক সংস্থার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। আর বোন ফেরদৌসী চৌধুরী ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট।
More News Of This Category