নিজস্ব প্রতিবেদক :-
পাহাড়ি ঢল ও বর্ষণে সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ১২টি স্থানের রাস্তাঘাট, বাসাবাড়ি ও দোকানপাট প্লাবিত হয়েছে। পানি ঢুকেছে সরকারের অন্তত ১০টি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে। আজ সোমবার ভোররাত থেকে ঢলের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সুরমা নদীর পানি শহরের পাড়া-মহল্লায় ঢুকে পড়ে। শহরের ব্যস্ততম স্থানগুলোতে হাঁটুসমান পানিতে যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রোববার রাত থেকে বৃষ্টিপাত কমলেও সুনামগঞ্জের অভ্যন্তরে ভারতের মেঘালয় পাহাড়ের উৎস থেকে প্রবাহিত চারটি সীমান্ত নদী দিয়ে ঢলের পানি দ্রুত গতিতে নামছে। সুনামগঞ্জ পয়েন্টে রবিবার সন্ধ্যায় সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৮২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও আজ সোমবার প্রায় ১২ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। সুনামগঞ্জ পয়েন্টে আজ সোমবার বেলা ৩টায় সুরমার পানি বিপৎসীমার ৯৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বিপৎসীমার ৯০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে সুরমার পানি বয়ে গেলে শহরের বিভিন্ন পাড়া-মহল্লা প্লাবিত হয়ে বন্যাপরিস্থিতি সৃষ্টি হয় বলে পাউবো সূত্র জানায়।সূত্র আরো জানায়, বৃষ্টি কমলেও মেঘালয় থেকে উৎপত্তি আন্তর্জাতিক সীমান্ত নদী যাদুকাটা, চলতি, সেলা ও খাসিয়ামারা দিয়ে প্রবল বেগে ঢলের পানি নামছে। এতে সুরমার দুই কূল উপচে লোকালয়ে ঢুকছে পানি, প্লাবিত হচ্ছে ফসলি ক্ষেত, বসতবাড়ি ও রাস্তাঘাট। এতে ক্ষয়ক্ষতিও বাড়ছে।
আজ সোমবার বেলা আড়াইটায় সুনামগঞ্জ শহরের উকিলপাড়া, লঞ্চঘাট, নবীনগর, মাছ বাজার, কাজীর পয়েন্ট, নবীনগর, পূর্ব নতুনপাড়া, পশ্চিম নতুনপাড়া, তেঘরিয় সেলুঘাট, পশ্চিম হাজীপাড়া, মল্লিকপুর ও পশ্চিম বড়পাড়া পয়েন্টে পানি লক্ষ্য করা গেছে। এসব এলাকার অন্তত ২০০ ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। কাজীর পয়েন্ট, উকিলপাড়া, তেঘরিয়া সেলুঘাট, লঞ্চঘাট ও নবীনগর পয়েন্টে হাঁটুসমান পানিতে সাধারণ মানুষকে যাতায়াত করতে দেখা গেছে। ওই এলাকায় পানি ভেঙে চলাচল করছে যানবাহন। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে এলাকাবাসী।
এদিকে, ঢলের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুল, সদর উপজেলা ভূমি অফিস, তহসিল অফিস, ভূমি অফিসের কোয়ার্টার, জেলা বক্ষব্যাধি ক্লিনিক, জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়, জেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির কার্যালয়সহ অন্তত ১০টি সরকারি প্রতিষ্ঠানে ঢলের পানি ঢুকেছে। বাসাবাড়িতে পানি প্রবেশ করায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে বাসিন্দারা।