দৃক নিউজ ২৪ ডেস্ক #
নীলফামারীর সৈয়দপুরে হতদরিদ্র এক নারী এনজিও থেকে নেয়া ঋণের কিস্তি দিতে না পারায় ৬টি ছাগল নিয়ে গেছে এনজিও কর্মীরা। ছাগল ফেরত না পাওয়ায় স্থানীয় থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন নির্যাতিত ওই সদস্য। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।জানাযায়, সেলফ হেলফ এন্ড রিহেবিলিটেশন প্রোগ্রাম (শার্প) নামের একটি স্থানীয় এনজিওর শাখা অফিস রয়েছে সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর বাজারে।
উল্লেখিত শাখা অফিসের পার্শ্ববর্তী বকসাপাড়া এলাকার মজিয়া খাতুন গত ৮ জানুয়ারী ১৪ হাজার টাকা ঋণ হিসেবে গ্রহণ করে প্রতিবেশী আইয়ুব আলীর স্ত্রী নিলুফাকে ধার দেয়। পরবর্তীতে নিলুফা আক্তার প্রতি সপ্তাহের সোমবার ৩৫০ টাকা হারে কিস্তি পরিশোধ করছেন।নিলুফা আক্তার ওই এনজিও’র সদস্য না হলেও এনজিও কর্মীরা তার কাছ থেকেই কিস্তি আদায় করছিল। কিন্তু নিলুফার স্বামী সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হওয়ায় তিনি গত সোমবার কিস্তি দিতে পারেননি। ফলে এনজিও কর্মীরা নিলুফা ও তার স্বামীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে আসেন।
এদিকে, সোমবার আসার আগেই গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় নিলুফা আক্তারের বাড়িতে হাজির হন এনজিও’র শাখা ম্যানেজারসহ কর্মী নাজমুন নাহার (নাজমিন), ডলিসহ প্রায় ১০জন। তারা নিলুফা আক্তারকে কিস্তির টাকার জন্য চাপ দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে নিলুফা ও তার স্বামী আইয়ুবকে তারা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও ধাক্কাধাক্কি করে এবং উঠোনে বেঁধে রাখা ৬টি ছাগল, হাড়ি-পাতিল নিয়ে যায়। ওই সদস্য বিষয়টি ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল করিম লোকমানকে জানান। চেয়ারম্যান বিষয়টি বিস্তারিত জানার জন্য এনজিও কর্মী নাজমিনকে মোবাইল করলে ওই কর্মী চেয়ারম্যানকেও অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ করে। শনিবার রাত ১০টা পর্যন্ত ওই সদস্য তার ছাগল ও হাড়ি-পাতিল ফেরত না পাওয়ায় শার্প এনজিও’র কামারপুকুর শাখা ম্যানেজার, ২ কর্মীসহ অজ্ঞাত ১০জনের বিরুদ্ধে সৈয়দপুর থানায় একটিঅভিযোগ দাখিল করেন।এদিকে, সদস্য নির্যাতন ও ছাগল, হাড়ি-পাতিল ছিনিয়ে আনার বিষয়ে শার্প’র নির্বাহী পরিচালক মাহবুব-উল-আলমের সাথে কথা হলে তিনি জানান, এ অনাকাঙ্খিত ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি। তদন্ত করে এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করব।কামারপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম লোকমান বলেন, নির্যাতিত সদস্য নিলুফা ও তার স্বামী আইয়ুব আমার কাছে এসে মৌখিক অভিযোগ করলে আমি বিষয়টি জানার জন্য এনজিও কর্মীকে মোবাইল করি। কিন্তু তারা আমার সাথেও খারাপ আচরণ করে। বিষয়টি আমি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।সৈয়দপুর উপজেলার নবাগত নির্বাহী অফিসার বজলুর রশীদ বলেন, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, হতদরিদ্রদের উন্নয়ন ঘটছে। এরকম সময়ে কোন এনজিও’র হাতে হতদরিদ্র কেউ নির্যাতনের শিকার হবেন এটা মেনে নেয়া যায় না। আমি বিষয়টি জানার পর ওই এনজিও’র নির্বাহী পরিচালককে তলব করেছি। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। তবে এখনো অভিযোগ পাইনি, অভিযোগ পেলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সুত্র নয়াদিগন্ত:
More News Of This Category