মিরজান হুসাইন:- সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলা সরকারি খাদ্যগুদামে জায়গা না থাকায় চলতি মৌসুমে ধান-চাল সংগ্রহ বন্ধ রয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। এ সমস্যা সমাধানে আরেকটি নতুন খাদ্যগুদাম নির্মাণ অতীব জরুরী হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টজনেরা।
জানাগেছে, বিগত এরশাদ সরকারের আমলে জগন্নাথপুর উপজেলা সদরে ৫০০ মেট্রিকটন ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি খাদ্যগুদাম নির্মাণ করা হয়। পুরনো এ খাদ্যগুদামটি এখন প্রায় জরাজীর্ণ হলেও ব্যবহার করা হচ্ছে।
তবে সময়ের ব্যবধানে জগন্নাথপুরে খাদ্যশষ্য উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ায় ন্যায্যমূল্যে সরকারের কাছে খাদ্যশষ্য ধান-চাল বিক্রি করতে আগ্রহী হচ্ছেন কৃষকরা। সরকারও বছর বছর ধান-চাল কেনার চাহিদা বৃদ্ধি করছে। তবে জগন্নাথপুর খাদ্যগুদামে জায়গা সংকটের কারণে প্রতি বছর ধান-চাল সংগ্রহ ব্যাহত হচ্ছে। গুদামে পর্যাপ্ত পরিমান জায়গা না থাকায় এ মৌসমে ধান-চাল সংগ্রহ বন্ধ হয়ে পড়েছে।
জগন্নাথপুর উপজেলা খাদ্যগুদাম সূত্র জানায়, এবার কৃষকদের কাছ থেকে ১৬৭৭ মেট্রিকটন ধান ও মিলারদের কাছ থেকে ৭৮২ টন চাল সংগ্রহ করা হবে। গত ১১ মে থেকে ধান-চাল সংগ্রহ শুরু হয়েছে। চলবে আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত। এর মধ্যে মাত্র ৩৬৫ টন ধান সংগ্রহ করা হলেও চাল একেবারেই করা হয়নি। শুধু গুদামে জায়গা সংকটের কারণে গত ১৫ দিন ধরে ধান-চাল সংগ্রহ বন্ধ রয়েছে।
১২ জুন রোববার জগন্নাথপুর খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা শিমলা রায় জানান, বর্তমানে গুদামে ৫৮৯ টন ধান-চাল মজুদ আছে। গুদামে আর তিল ধারণের জায়গা নেই। যে কারণে গত ১৫ দিন ধরে ধান-চাল সংগ্রহ বন্ধ রয়েছে। এ সময় গুদামে ধান বিক্রি করতে আসা কেশবপুর গ্রামের কৃষক আবদুল মজিদ সহ অনেকে হতাশা প্রকাশ করে বলেন, আমরা অনেক আশা নিয়ে সরকারি গুদামে ধান বিক্রি করতে এসেছিলাম। গুদামে জায়গা না থাকায় সংশ্লিষ্টরা আমাদের ধান কিনছেন না। এতে নিরাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছি। তারা আরো জানান, খোলা বাজারে বর্তমানে প্রতি মণ ধানের দাম রয়েছে ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা। আর সরকার কিনছে ১০৮০ টাকায়। এখন সরকারের কাছে ধান বিক্রি করতে না পারায় আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। তাই কৃষকদের বাঁচাতে জগন্নাথপুরে আরেকটি নতুন গুদাম নির্মানের দাবি জানান সচেতন মহলের নেতৃবৃন্দ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জগন্নাথপুর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ আবদুর রব জানান, গুদামে জায়গা সংকটে ধান-চাল সংগ্রহ বন্ধ থাকার বিষয়টি আমাদের উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করছি, কয়েক দিনের মধ্যে গুদামে মজুদ থাকা খাদ্যশষ্য অন্য গুদামে সরিয়ে আবার ধান-চাল সংগ্রহ করা হবে। তবে জগন্নাথপুরে আরেকটি নতুন গুদাম নির্মাণ এখন জরুরী হয়ে পড়েছে।
More News Of This Category