মাওলানা আবু সাঈদ সৈয়দ:- ফিতরা বা যাকাতুল ফিতর কি টাকা দিয়ে দেওয়া জায়েয হবে? রসুল সা এর সময় তো খাদ্য দিয়ে দেওয়া হতো।
অনেকে তো জব, কিসমিস, খেজুর ইত্যাদি দিয়ে ফিতরা দিতে বলেন।
আপনার প্রশ্নের জবাব হলো:
০১. রসুল সা এর সময় তো ফরজ যাকাতের ক্ষেত্রেও মালের যাকাত মাল দিয়ে দেয়া হতো।
০২. রসুলুল্লাহ (সা:) এর সময় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দিনার দিরহাম দিয়ে কেনাবেচা হতো না। তাঁর সময় অধিকাংশ ক্ষেত্রে এক মাল দিয়ে আরেক মাল কিনা হতো।
০৩. পরবর্তীকালে ইসলামের আলেমগণ যাকাত দাতা ও যাকাতের সুবিধাভোগীদের সুবিধা ও প্রয়োজনের বিষয়গুলো বিবেচনা করে অর্থ বা টাকা পয়সা দিয়ে যাকাত দেয়াকে অধিকতর সহজ ও কল্যাণকর বলে মত প্রদান করেছেন। আর এমতই সারা বিশ্বে শত শত বছর থেকে চালু রয়েছে।
০৪. এখন যদি কেউ হাদিসের নামে হাদিসের মর্ম না বুঝে মালের যাকাত মাল দিয়ে দিতে হবে এই ফতওয়া দেয় তারা তারা মূলত অজ্ঞতার অন্ধকারে বাস করছে। তারা হাদিসের মর্ম বুঝতে অক্ষম।
০৫. ফিতরা বা যাকাতুল ফিতর অবশ্যই টাকা পয়সা দিয়ে দেয়া যাবে এবং জায়েজ। আপনি টাকা দিয়ে অবশ্যই আদায় করিলে, ফিতরা আদায় হবে।
কারণ, ফিতরার সুবিধাভোগীদের কিসমিস, জব, খেজুর , সেমাই নয়।
বরং ঈদ করার জন্যে তাদের আরো অধিক প্রয়োজন অন্যান্য জিনিস,
যেমন বাচ্চাদের জামা কাপড়, চাল, ডাল, একটু গোশত এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস লাগে।
০৬. সৌদি আরবের মুফতিরাও আমাদের এই মতের পক্ষেই ফতওয়া দিয়ে থাকেন। একজন বড় আলেমের বক্তব্য এখানে উল্লেখ করছি:
শায়খ উস্তায ড. আবদুল্লাহ বিন আল মতলক, সদস্য হাইয়াতু কিবারিল উলামা মক্কা সৌদি আরবকে প্রশ্ন করা হয়:
ফিতরা যদি খাদ্যের বদলে নগদ অর্থ দিয়ে প্রদান করা হয়, তবে তা কি জায়েয হবে?
জবাব তিনি বলেন:
“হ্যাঁ, নগদ টাকা পয়সা দিয়ে ফিতরা জায়েয হবে ।
কেউ যদি নগদ টাকা পয়সা দিয়ে যাকাতুল ফিতর (ফিতরা) আদায় করতে চায় তোমরা তাকে নিষেধ করোনা। মুখাপেক্ষী লোকেদের খাদ্যের চাইতে অর্থ বেশি প্রয়োজন।
সবাই যদি তাকে খাদ্য দান করে তবে সে অর্থের প্রয়োজনে সেগুলো সস্তায় বিক্রয় করে দেবে।”
এই একই প্রশ্ন করা হয় শায়খ আলবানিকে।
জবাবে তিনি বলেন:
“হ্যাঁ, অবশ্যি জায়েয হবে। এ বিষয়ে হানাফি মত সবচাইতে যুক্তি সঙ্গত।”
(দ্রষ্টব্য: কিতাবুল হাবি ফী ফতওয়া আলবানি ১ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ২৮৪)
০৭. ইসলামকে যারা কঠিন করতে চায় তারা ইসলামের ক্ষতি করে।
More News Of This Category