নিজস্ব প্রতিবেদক:- একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মৌলভীবাজারের শামসুল হোসেন তরফাদারসহ পাঁচ রাজাকারের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের ১৫তম সাক্ষী মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) হরিদেব নাথ তার জবানবন্দি পেশ করেছেন।
জবানবন্দিতে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, তদন্তকালে আমি ৩১ জন সাক্ষীকে জিজ্ঞাসাবাদ করি এবং তাদের বক্তব্য লিখেছি। পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস (ট্রাইব্যুনালস) অ্যাক্ট ১৯৭৩ এ ধারা ৩ (২) তৎসহ ধারা ৪(১) অনুসারে হত্যা, গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ, নির্যাতন, অপহরণসহ ছয়টি অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হওয়ায় তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করি।
শামসুল হোসেন তরফদার ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন- মোবারক মিয়া, নেসার আলী, ইউনুস আহমেদ এবং ওজায়ের আহমেদ চৌধুরী। তাদের মধ্যে ইউনুস আহমেদ ও ওজায়ের আহমেদ চৌধুরী কারাগারে রয়েছেন। বাকি তিনজন পলাতক।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তার (আইও) জবানবন্দি গ্রহণ করা শেষে আসামিপক্ষের আইনজীবী তাকে জেরার কার্যক্রম শুরু করেন। জেরার কার্যক্রম অসমাপ্ত রেখে মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ২ নভেম্বর দিন নির্ধারণ করা হয়েছে।
রোববার ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর সুলতান মো. সিমন ও রেজিয়া সুলতানা চমন। অন্যদিকে আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আব্দুস সুবহান তরফদার।
তদন্ত কর্মকর্তা আরও বলেন, আমার নাম হরিদেব নাথ। বয়স আনুমানিক ৫৬ বছর। আমি পুলিশের সিনিয়র এএসপি। ২০১২ সালের ১০ ডিসেম্বর থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আছি। তদন্ত সংস্থার কমপ্লেইন্ট নম্বর ৩৭, তারিখ ২০১৪ সালের ১২ অক্টোরব আসামি শামসুল হোসেন তরফদার ওরফে আশরাফ, মো. নেছার আরী ও ইউনুছ আহম্মেদের বিরুদ্ধে তদন্ত সংস্থার সমন্বয়কের স্মারক নং ১৪৪৪, তারিখ ২০১৪ সালের ১২ অক্টোবর মূলে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস (ট্রাইব্যুনালস) অ্যাক্ট- ১৯৭৩ এর ধারা ৩(২) এ বর্ণিত মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্তভার গ্রহণ করে তদন্ত শুরু করি। তদন্ত শেষে তাদের বিরুদ্ধে ছয়টি অভিযোগ দাখিল করি।
আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ, নির্যাতন, অপহরণসহ পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ১৮ জনকে হত্যা-গণহত্যা, ১১ জনকে অপহরণ আটক ও নির্যাতন এবং ২২টি বাড়িঘরে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ।
২০১৪ সালের ১২ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে তদন্ত সংস্থা। মোট ১ বছর ৩ মাস ৯ দিন তদন্ত করে ৯৮ পৃষ্ঠার মূল প্রতিবেদনসহ ২৭৯ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে ৮৩ পৃষ্ঠার সাক্ষীদের জবানবন্দি, ৪০ পৃষ্ঠার জব্দ তালিকা ও দালিলিক প্রমাণপত্র এবং ৫৮ পৃষ্ঠার অন্যান্য ডকুমেন্টস।
সুত্র জাগোনিউজ
More News Of This Category