মোঃ হুমায়ূন কবীর ফরীদি# রোহিঙ্গাদের ওপরে মিয়ানমারের শাসক আং সান সু চির ‘আক্রোশ’–এর শিকার কি পুরনো ভেঙে যাওয়া প্রেম? এই আলোচনা ও সমালোচনায় উত্তাল গোটা বিশ্বে। অনেকেই দাবি করছেন, ১৯৬৪ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় তারেক হায়দার নামে এক পাকিস্তানি ছাত্রের প্রেমে পড়েছিলেন সু চি। কিন্তু পূর্ণতা পায়নি সেই প্রেম। তারপর থেকেই নাকি ইসলামবিদ্বেষী হয়ে পড়েন সু চি।
ইংরেজি এবং উদ্ভিদবিদ্যা নিয়ে পড়ার ইচ্ছায় অক্সফোর্ডে এসেছিলেন সু চি। কিন্তু সুযোগ পাননি। অবশেষে ভর্তি হন দর্শন নিয়ে। সেখানে তার আলাপ হয় পাকিস্থানি তরুন তারেকের সাথে। তিনি আবার তখন পাকিস্তানের কূটনীতিক। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের থেকে বিশেষ অনুমতি নিয়ে অক্সফোর্ডে পড়তে এসেছিলেন তারেক। সু চির মা–ও ছিলেন কূটনীতিক। তাই একই পেশার তারেকের প্রেমে পড়তে সু চির সময় লাগেনি।
সু চির জীবনীকার বিখ্যাত লেখক ও সাংবাদিক পিটার পপহ্যামও বলেছেন, ‘সংস্কৃতিগতভাবে অনেক পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও সু চি এবং তারেক গভীর প্রেমে পড়েছিলেন।’ ১৯৬৫ সালে ভারত–পাকিস্তান যুদ্ধের সময় তারেককে খুশি করতে ভারতীয় ছাত্রছাত্রীর কথা বলাও বন্ধ করেছিলেন। প্রেম নিয়ে সু চি এতটাই ব্যস্ত হয়ে পড়েন যে তৃতীয় বিভাগে কোনো রকমে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন সু চি।
অক্সফোর্ডের পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরে তারেক পাকিস্তানে ফিরে যান। সু চি চাইলেও নাকি তারেক তাকে বিয়ে করেননি। এরপরে শোকে বিমর্ষ হয়ে পড়েন সু চি। সেই সময় থেকেই নাকি তিনি ক্রমান্বয়ে মুসলিমবিদ্বেষী হয়ে ওঠেন। পপহ্যাম লিখেছেন, ‘সু চি বছর খানেক প্রেমের বিরহে বিমর্ষ ছিলেন। এই সময়ে ইংল্যান্ডে সু চির পুরনো পারিবারিক বন্ধু স্যার পল গর বুথ ও মিসেস বুথের পুত্র ক্রিস্টোফার সু চি–র পরলোকগত স্বামী মাইকেল অ্যারিসের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন সু চির। এবং ১৯৭২ সালে তারা বিয়ে করেন।’ পপহ্যাম ‘দ্য লেডি অ্যান্ড পিক’–এ লিখেছেন, সু চি–র ব্যক্তিগত জীবনের অনেক কিছুই না কি জটিলতায় পূর্ণ ও বৈপরীত্যে ভরা। তাই রোহিঙ্গা নির্যাতনের পিছনে সু চির ব্যর্থ প্রেমের কাহিনীকেও উড়িয়ে দিচ্ছেন না অনেকে।
More News Of This Category