,
শিরোনাম
মাও: এমদাদুর রহমান (রহ:) মেমোরিয়াল ট্রাস্ট এর উদ্যোগে জননেতা আশরাফুল ইসলামের অর্থায়নে পবিত্র ঈদ-উল ফিতর উপলক্ষে দরিদ্র হতদরিদ্র দুই শতাধীক পরিবারের মধ্যে নগদ অর্থ বিতরন মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে রেড ব্লাড সিলেট এর  শ্রদ্ধাঞ্জলি ও পুষ্পস্তবক অর্পণ নিউইয়রকে ইউএস বাংলা অনলাইন প্রেস ক্লাবের অভিষেক সম্পন্ন : সভাপতি মাহফুজ আদনান, সাধারন সম্পাদক আবু সাদেক রনি ‘রেড ব্লাড সিলেট’র উদ্যোগে বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয় ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত জগন্নাথপুর উপজেলায় রেল সংযোগ প্রসঙ্গে জগন্নাথপুরের কলকলিয়ায় ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল এ সাদেক ইন্টারন্যশনাল একাডেমির বই উৎসব জগন্নাথপুরে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল এ সাদেক ইন্টারন্যশনাল একাডেমির শুভ উদ্বোধন সিলেটে কলেজছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার লন্ডন-আমেরিকার মহব্বতের দরকার নেই : জগন্নাথপুরে পরিকল্পনামন্ত্রী পাগলা-জগন্নাথপুর সড়কে বাসের সঙ্গে মোটরসাইকেল সংঘর্ষ : নিহত ১

এ খেলার শেষ কোথায়; মাদরাসায় গ্রন্থাগারিক নিয়োগ প্রসঙ্গ

আবুযর মাহতাবী

প্রত্যেক খেলা শুরু হলে, সময়ের ব্যবধানে তার একটা ইতি ঘটে।

যে খেলা মানুষকে আনন্দ দেয় সে খেলার সময় দীর্ঘ হলেও সমস্যা নেই। কিন্তু যে খেলায় সাহিত্য সংস্কৃতি বিকাশে বাধা সৃষ্টি করে শিক্ষিত বেকারের মানবিক ও ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়,যে খেলায় মানুষের জীবনকে অনর্থ করে ফেলে, জীবনকে ফেলে দেয় হতাশার সাগরে, সে খেলাকে দীর্ঘ সময় ব্যাপী পরিচালনা করা কোন মানবিকতার পরিচায়ক ? কিন্তু দুঃখের হলেও সত্য যে, আজ এমন একটি খেলার কথা বলছি যে খেলা শুরু হয়েছিলো ২০১০ থেকে আজ অবধি সে খেলা চলমান! কবে সে খেলার অবসান হবে? তা আল্লাহ ই ভালো জানেন? কৌতুহলী পাঠকের মনে প্রশ্ন জাগে কি এমন খেলা যেটা বিগত দশ-এগারো বছরেও সমাপ্তি ঘটছে না? এ খেলার আয়োজক ই বা কারা কি সেই খেলা? আসলে খেলার শিরোনাম হচ্ছে মাদরাসায় গ্রন্থাগার ও সহগ্রন্থাগারিক নিয়োগ।
দীর্ঘদিন ধরে দেশের মাদরাসা কর্তৃপক্ষ ও মাদরাসা শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবী ছিলো কামিল মাদরাসায় গ্রন্থাগারিক ও দাখিল আলিম মাদরাসায় সহকারী গ্রন্থাগারিক নিয়োগ দেয়া। ২০১০ সালের নীতিমালায় এ পদ গুলো সৃষ্টি হলে এর আলোকে স্কুল কলেজে নিয়োগ চলমান থাকলে ও মাদরাসায় নীতিমালা সংশোধনের অযুহাত দেখিয়ে তা আর বাস্তবায়িত হয়নি?
সংশোধনির অপেক্ষা করতে করতে আসলো ২০১৮। প্রনীত হলো নতুন নীতিমালা। শিক্ষা বান্ধব সরকারের মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর অবদানে উক্ত নীতি মালা প্রকাশের পর মাদরাসা অঙ্গনে উন্মুক্ত হয় সৃজনশীলতা ও সময়োপযোগী আধুনিকায়নের নতুন দিগন্ত। উদ্দীপ্ত ও আশান্বিত হয় মাদরসা শিক্ষক শিক্ষার্থীর ও গ্রন্থাগার ডিপ্লোমাধারী চাকরী প্রত্যাশীরা। ২০২০ -২১অর্থ বছরে সৃষ্ট পদ হিসেবে বাস্তবায়নের প্রজ্ঞাপন জারি হলো। এর পর আসলো আরেক বিপদ।
জেনারেলরা হাইকোর্টের মাধমে স্থগিত করে বাধাগ্রস্থ করলো নিয়োগ প্রক্রিয়া। বিপরিতে জমিয়তুল মুদাররিছিন ও গ্রন্থাগার ডিপ্লোমা মাদরাসা ছাত্রঅধিকার পরিষদের প্রচেষ্টায় প্রতিবন্ধকতা দূর হলো। স্বস্তির নিশ্বাস নিলো ডিপ্লোমাধারীরা। অতপর বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ কর্নারের শর্তারোপ করে হয়রানি করা হলো মাদরসা প্রধানদের কে। যখন সেটা দিয়ে প্রতিবন্ধকতায় ব্যর্থ হলো তখন চলে আসলো অদ্ভুত ১৬ শর্তের প্রতিবন্ধকতা। যখন বুঝতে পারলো এদেরকে শর্তদিয়ে এভাবে দমন করা যাবেনা তাই বের হলো আরেক অপকৌশল স্কুল কলেজের ৯৫ % নিয়োগ শেষ হওয়ার পর শিক্ষক মর্যাদা দিয়ে এনটি আর সি তে নিয়ে নেয়া হলো। এখন সমমান প্রক্রিয়ার নিয়োগ সংশোধনের অযুহাতে মৌখিক আদেশে বন্ধ করে দেয়া হয় মাদরসার চলমান নিয়োগ প্রক্রিয়া।
অথচ বেসরকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (মাদরাসা) জনবল কাঠামো-১৮ অনুযায়ী গ্রন্থাগারিক/সহকারি গ্রন্থাগারিক শূন্যপদ ২০২০-২১এ বাস্তবায়িত হওয়ার নির্দেশনা অনুযায়ী মাদরাসা গুলো উক্ত পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়ার প্রেক্ষিতে চাকরি প্রত্যাশীরা উক্ত পদে নিয়োগের জন্য ৫০০-১০০০ টাকা ব্যংক ড্রাফ্ট/ পোষ্টাল অর্ডার সহ প্রত্যেকে অনেক আবেদন করে। আচ্ছা একটি বেকার চাকরী প্রার্থী যদি একটি চাকরীর আশায় ১০০০ টাকা পোষ্টাল অর্ডার দিয়ে মাসে ১০ টি আবেদন করে তবে মাসে আবেদনের খরচ পড়ে ১০০০০ হাজার টাকা। সে বেকারের মাসে ১০০০০ আয় আছে কী ? স্বপ্নচারী বেকারদের ডিপ্লোমা দেয়ার অর্থ কালেকশনে করুণ কাহিনী ডাস্টবিনে রেখে দিলাম।আবেদনের চিত্র এমন ও দেখেছি বেকার যুবকটির পরিবারের একমাত্র সম্বল ঘরের গরু ছাগল বিক্রি করে এই সব জবে আবেদন করেছে। কিন্তু অনেক সার্কোলারের মেয়াদ চলে যাচ্ছে তবুও মাদরাসা অধিদপ্তর থেকে ডিজি প্রতিনিধি না দেয়ায় প্রতিষ্ঠান প্রধানরা নিয়োগ পরীক্ষা নিতে পারছেন না। এতে অনেক চাকরী প্রত্যাশীদের বয়স বেড়ে যাওয়ায় বর্তমানে চাকুরীর আবেদনের যোগ্যতা হারাতে যাচ্ছেন।যা বেকার চাকরী প্রার্থীদের আর্থিক ক্ষতি, হতাশা ও অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে দিচ্ছে। বাংলাদেশে যখন কর্ম সংস্থানের অভাবে উচ্চ শিক্ষিতরা দিশেহারা তখন বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তির লক্ষ্যে চাকরির বয়সের প্রান্তে এসে বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন হিসেবে গ্রন্থাগারিক পেশাকে আশার আলো বিবেচনায় অধিকাংশ মধ্য-নিম্নভিত্ত পরিবারের বেকার সন্তানরা সর্বস্ব বিলিয়ে জীবনের শেষ অবলম্বন লাইব্রেরি ডিপ্লোমা কোর্স সম্পন্ন করে সার্টিফিকেট অর্জন করে । কিন্তু দুখের হলেও সত্য যে, মাদরাসা সমমান উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজে অত্র পদ টিতে দীর্ঘ ১০ বছর প্রচলিত নিয়মে নিয়োগ প্রক্রিয়া চলমান থাকলে ও মাদরাসা গুলো অদৃশ্য ষড়যন্ত্রে নিয়োগ প্রতিবন্ধকতার শিকার হচ্ছে, এ সকল প্রতিবন্ধকতার দ্রুত অবসানে শিক্ষামন্ত্রনালয় স্কুল কলেজ সহ মাদরাসা অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্টদের সমীপে নিম্নোক্ত দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
★অবিলম্বে গ্রন্থাগারিক /সহকারী গ্রন্থাগারিক নিয়োগের সকল প্রতিবন্ধকতা প্রত্যাহার পূর্বক ডিজি প্রতিনিধি নিয়োগ চলমান চাই।
★এ পদ টি ntrc, অধিনে নেই বলেই শিক্ষার্থীরা এ বিষয়ে ডিপ্লোমা করেছে, বর্তমানে অন্তত ২ টি বছর তাদের কে নিঃশর্ত প্রচলিত নিয়মে নিয়োগের সময় দিন। অথবা পত্রিকা বিজ্ঞপ্তির মেয়াদ উত্তীর্ণ সহ যে সকল নিয়োগ প্রক্রিয়া চলমান আছে সে সকল নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারলে সুবিচার হবে বলে মনে করছি।
এখন মাদরাসা অধিদপ্তরের দেয়া ১৬ শর্তের যুক্তিকতা নিয়ে আলোচনা করা যাক । গ্রন্থাগারিক নিয়োগের ক্ষেত্রে ৪০০ বর্গফুট লাইব্রেরি রুম, এটাচ বাথরুম, সুইট্যাবল রিডিং স্পেস, এভেইলেবল ইলেক্ট্রিক ম্যাটেরিয়ালস, মিনিমাম বুকস ক্রাইটেরিয়া, সাফিসিয়েন্ট ডিজিটালাইজেশন, ওয়াইফাই, ই-বুক সহ আরও কী কী থাকতে হবে। সব মেনে নিলাম। সরকার মানে শিক্ষা ডিপার্টমেন্ট কয়টা মাদ্রাসায় এ পর্যন্ত লাইব্রেরী বরাদ্ধ করেছেন? সে হিসেব না হয় থাক। এই যে অদ্ভুত একটা ক্রাইটেরিয়া দেওয়া হলো- “ক্যাটালগ সিস্টেম” থাকতে হবে!
এটা কীভাবে সম্ভব? এত সব ক্রাইটেরিয়া মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ লাইব্রেরিয়ান নিয়োগ ছাড়া কিভাবে করবে?
আচ্ছা বুঝলাম মাদ্রাসায় নিয়োগপ্রাপ্ত সুপার/অধ্যক্ষ, টিচার, কর্মচারী সবাই একেকজন সুপারম্যান৷ খেটেখুটে সবাই মিলে একটা উন্নত জাতের লাইব্রেরি বানিয়ে, ইউএনও/এডিসি দিয়ে পরিদর্শন করিয়ে অধিদপ্তরে গিয়ে বললেন এই দেখেন আমরা স্মার্ট একটা লাইব্রেরি করেছি আপনাদের ফর্মুলামতে। এবার আমাদের গ্রন্থাগারিক নিয়োগ দেন। উনারা তখন গ্রন্থাগারিক কেন নিয়োগ দেবেন? বসে বসে লাইব্রেরি পাহারা দিয়ে বেতন নেওয়ার জন্যে? কারন গ্রন্থাগারিকের যে কাজ এটা তো শেষ তার নিয়োগের আগেই।
স্কুল কলেজে ২০১০ থেকে সহকারী গ্রন্থাগারিক নিয়োগ হচ্ছে কই বাংলাদেশের কোন স্কুলে এরকম ডিজিটাল একটা লাইব্রেরি আছে? হাস্যকর কয়েকটা শর্ত জুড়ে দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে মাদরসা কর্তৃপক্ষকে
সিলেটের আঞ্চলিক একটি তীর্যক কথা আছে “আগার আগে হছা” অর্থাৎ পায়খানার পূর্বে সৌচকার্য সম্পাদন। এটা যেমন হাস্যকর এ শর্তগুলো তেমন ই হাস্যকর। সর্বশেষ সংশোধনীতে মনে করেছিলাম এ বিষয়ে নির্দেশনা আসবে সেখানে ও যেহেতু এর কোন সংশোধনী নেই তাহলে কেনো প্রচলিত নিয়মে এ নিয়োগ প্রক্রিয়া হচ্ছে না ? সুতরাং এ খেলার শেষ কোথায়? একদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে বর্তমান প্রজন্ম কে পঙ্গু করে দেয়া হচ্ছে অপরদিকে লাইব্রেরি নিয়ে খেলা করে জাতিকে ধ্বংসে র পথে টেলে দেয়া হচ্ছে নাতো? সুতরাং এ খেলা আর কতোদিন? এ খেলার অবসান চাই। প্রচলিত নিয়মে নিয়োগ কার্যক্রম বাস্তবায়ন হোক,শিক্ষিত বেকার রা বেকরত্ব থেকে মুক্তি পাক।
লেখক,কলামিস্ট।

     More News Of This Category

ফেসবুকে আমরা

 

 

Prayer Time Table

  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ভোর ৪:২৮
  • দুপুর ১২:০৩
  • বিকাল ৪:৩০
  • সন্ধ্যা ৬:২২
  • রাত ৭:৩৭
  • ভোর ৫:৪১